সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের (শাকসু) দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শাকসু নির্বাচন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ কোনো ধরনের নির্বাচনের আয়োজন হতে দেওয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিমের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির, গণিত বিভাগের হাফিজুল ইসলাম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পলাশ বখতিয়ার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ফয়সাল হোসেন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘শাবিপ্রবির সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে আপনাকে জানাতে চাই যে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। গণতন্ত্রের চর্চা, নেতৃত্ব বিকাশ এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় এটি একটি অপরিহার্য কাঠামো, যার অনুপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা সাংগঠনিক ও নৈতিক দিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘শাকসু নির্বাচন না থাকার ফলে অতীতে আমরা দেখেছি নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের মদদে মাদক, অস্ত্র এবং সন্ত্রাসের মতো সংস্কৃতি কীভাবে ক্যাম্পাসে জায়গা করে নিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুস্থধারার নেতৃত্ব গড়ে তুলতে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে শাকসু নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।’
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা শিক্ষার্থীদের ৬ দাবির মধ্যে রয়েছে।
এক. ৪ কর্মদিবসের মধ্যে শাকসুর গঠনতন্ত্র প্রকাশ ও উন্মুক্ত আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করতে হবে।
দুই. ৭ কর্মদিবসের মধ্যে শাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
তিন. অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
চার. ভোটার তালিকা প্রকাশ ও আপত্তি গ্রহণের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে যেন প্রতিটি বৈধ শিক্ষার্থী তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
পাঁচ. নির্বাচনী প্রচার, সভা ও বিতর্ক আয়োজনের জন্য সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ছয়. গঠনতন্ত্রে উল্লিখিত প্রতিটি পদের কার্যক্রম ও ক্ষমতাকাঠামো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে শিক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, শাকসুর বিষয়ে আমরা সর্বদা ইতিবাচক। উপাচার্য স্যার দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে আসার পর শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে শাকসুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।