মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পতিতা ও মাদক ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া ও তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার কর্তৃক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যসহ সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের ভানুগাছ রোডস্থ টি ভ্যালি পার্টি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে শহরের কালীঘাট রোডস্থ ইমদাদুল হক পিতা আব্দুস সালাম এর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ আকাশ।
লিখিত বক্তব্যে এমদাদুল হক দাবি করেনগ ত ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ইং তারিখ ইং তারিখে রাত প্রায় সাড়ে নয়টায় আমার ভাতিজা সজিব মিয়া (১৬) বাজার থেকে আমাদের নিজ বাড়িতে আসার পথে শহরের সোনার বাংলা রোড এলাকায় (নতুন বাজার দক্ষিণ রোড) শ্রীমঙ্গলের কুখ্যাত মাদক কারবারী স্বপন মিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার (২৯) আমার ভাতিজা সজিব মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় তাদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আমার ভাতিজা সজিব মিয়া গুরুতর আহত হয়।হামলার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সে ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে স্বপন ও তার স্ত্রী শিল্পী কিভাবে সজিবকে বিনা কারনে ধাওয়া করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছেন। আমার আহত ভাতিজার চিকিৎসা শেষে আমি বাদি হয়ে গত ২৬ আগস্ট (২০২৫) বিষয়টি নিয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। একই দিনে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনগণের গণস্বাক্ষরে রেলের অবৈধভাবে জায়গা দখল করে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন রেলওয়ে থানা পৌরসভা ও শ্রীমঙ্গল থানার বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়।
ওই ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমার অভিযোগটি এজহার হিসেবে গ্রহণ করতে তদন্তের নামে সময় ক্ষেপন করেন। ২৭ আগস্ট রাতে স্বপন ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তারের দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিবাদ সমাবেশে ব্যবসায়ী, সংবাদ কর্মী সমাজকর্মী সাধারণ মানুষ দাবি করে বলেন, ২৬ আগস্ট আমার দেওয়া অভিযোগ এজহার হিসেবে গণ্য না করে সময় ক্ষেপনের মাঝে গত ৩১ আগস্ট মাদক সম্রাট স্বপন মিয়ার স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে আমার ভাতিজাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার মূল ঘটনাকে উল্টো ঘুরিয়ে তার উপর হামলা হয়েছে দাবি করে ৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক মামলা দায়ের করে আরও ৫০-৬০ অজ্ঞাতনামা আসামি করে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় গত ২৭ আগস্ট তারিখের প্রতিবাদ সভায় ভুমিকা পালনকারী শ্রীমঙ্গল বস্ত্র ব্যবসায়ী মাঈনুল মিয়া, শ্রীমঙ্গল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আক্তার মিয়া, তার ভাই শাহিন মিয়া, বোনের জামাই সৌরভ মিয়া,সোহান মিয়া, সাগর মিয়া, মারুফ মিয়াকে।
একই পরিবারের তিন সদস্যের সাথে আমার ২৬ আগস্ট থানায় দাখিলকৃত অভিযোগের মূল স্বাক্ষী সোহান মিয়া ও সৌরভ মিয়াকে ওই মামলায় আসামি করা হয়। মাননীয় আদালত থেকে ওই মামলার কপি শ্রীমঙ্গল থানায় আসার পর আশ্চর্যজনক হলেও সত্য আমার মামলাটি রেকর্ড হতে ১৩ দিন সময় ক্ষেপন করা হয়। শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী মাঈনুল মিয়া গংদের বিরুদ্ধে মাননীয় আদালতে যে মামলাটি করা হয় সে মামলায় বাদি শিল্পী বিভিন্ন বানোয়াট অভিযোগ এনে বিজ্ঞ আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আনিতো ধারাগুলো নিম্নরূপ-সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২নং আমলী আদালত মৌলভীবাজারে সিআর মামলা নং() দন্ডবিধি মূলে এক মামলা দায়ের করেন।
এসময় স্বপন মিয়া ও শিল্পীর দেয়কৃত মামলার দুই নারী সাক্ষী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বানোয়াট মামলা সম্পর্কে আমরা কিছু জানিনা এবং আমরা ইমামরাতে সাক্ষী হিসেবে কাউকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য বলিনি। এ ব্যাপারে ওই মামলার ৩নং স্বাক্ষী জরিনা বেগমের (স্বামী : কালা মিয়া) বাড়িতে পালাইয়া যাওয়ার কথাটিও তিনি ও তার মেয়ে জুনু আক্তার অস্বীকার করেন।
সাক্ষী গণ আরো জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মৌলভীবাজার নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে একটি এফিডেভিট করেছি যার নং-৫৭৪।
উল্লেখ করেন, আমাদেরকে যে বিষয়ে সাক্ষী দেওয়া হয়েছে আমরা সে বিষয়ে কিছু জানিনা এবং এ ঘটনা মিথ্যা।
সংবাদ সম্মেলনে ইমদাদুল হক আরো দাবি করেন, আমার ভাতিজা সজিব মিয়াকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম করার ঘটনা (যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়) আড়াল করতে বা ওই ঘটনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে এই মিথ্যা মামলার অবতারণা করা হয়েছে। আমি এই মিথ্যা মামলা বাতিল ও আমার ভাতিজার সজিবের উপর হামলার ঘটনায় মাদ্রক সম্রাট স্বপন ও তার স্ত্রী শিল্পী আক্তারের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংবাদ সম্মেলন কারীরা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ১২২৩ এর সাধারণ সম্পাদক মো মিছির আলি, মোঃ মনিরুল ইসলাম সাংগঠনিক, শ্রীমঙ্গল শমশেরনগর বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ তসলিম, শ্রীমঙ্গল বস্তা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অজয় দেব, সহ-সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেন, সহ যুগ্ম সম্পাদক মোঃ মামুন মিয়া প্রমুখ।
এব্যাপারে অভিযুক্ত শিল্পী ও স্বপনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের মুঠো ফোনটি সুইচট অফ পাওয়া যায়।
অপরদিকে মামলা দেরিতে হওয়ার ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সংবাদ লেখা পর্যন্ত তিনি একটি ট্রেনিংয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।