ছাতকে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম সহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বেশ কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারবৃন্দ। উপজেলার ১৫ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বিগত ১৫ জুলাই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও এসডিআই আরআইআইপি (SDIRIIP) প্রকল্পে কর্মরত উপ- সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় সিংহের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের কপি দুর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দেওয়া হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে উপজেলা প্রকৌশলী শুধু ঘুষ আর ঘুষ নিয়েই ব্যস্থ। ফাইল আটকিয়ে বিভিন্ন ভাবে টাকা আদায় ও মাসের পর মাস টাকার জন্য ফাইল আটকিয়ে দিয়ে ঠিকাদারদের হয়রানি করে যাচ্ছেন তিনি। ছাতকে তার যোগদানের পর থেকেই ঠিকাদার হয়রানির কার্যক্রম এ অফিসে শুরু হয়েছে। কাজ বাস্তবায়নের পর বিলের জন্য এসে বিল পাওয়া যায়নি। সঠিক ভাবে কাজ করার পরও ঠিকাদারদের বিভিন্ন স্তরে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি ফান্ডে টাকা থাকা স্বত্ত্বেও বিল প্রদানের শর্ত হিসেবে ২% ঘুষ প্রদান না করলে বিল প্রদান করছেন না। এখানে এমনও ঠিকাদার আছেন যারা বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে লোন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন যার ফলে বাধ্য হয়ে উনারা উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের অবৈধ ২% টাকা প্রদানে বাধ্য হয়।
গত ০৬-০৩-২০২৫ ইং তারিখে জিপিএস স্কুলের ফান্ড থাকা স্বত্বেও তিনি ২% দাবী পুরণ না হওয়ার ফলে বিল প্রদান করছেন না। অতিরিক্ত ঘুষ বানিজ্য করার জন্য এসডিআই আরআইআইপি (SDIRIIP) প্রকল্পে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় সিংহ কে ব্যবহার করেন তিনি। উপজেলা প্রকৌশলী সপ্তাহে দুই দিন অফিসে বসেন, আর অবশিষ্ট দিন সকালে সিএনজি নিয়ে বিভিন্ন সাইট ঘুরেন এবং সাইটে কর্মরত ম্যানেজারকে কাজের মান ভাল হয়নি ইত্যাদি হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে সিএনজি ভাড়ার কথা বলে একেক সাইট থেকে সর্বনিম্ন ২-৩ হাজার টাকার ব্যবস্থা নিয়ে আসেন। প্রায়ই তার এই ধরনের হয়রানীমূলক কর্মকান্ডে এখানের ঠিকাদাররা অতিষ্ঠ বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
উপজেলা প্রকৌশলীর সাবেক কর্মস্থলেও ঘুষ বানিজ্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। একটি জাতীয় দৈনি কে গত ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ইং একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ হয় এ প্রকৌশলীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার করে যাচ্ছেন তিনি। SDIRIIP প্রকল্পে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় সিংহকে সাইটে পাঠিয়ে ঠিকাদারকে বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে উপজেলা প্রকৌশলীকে ঘুষ দেয়ার জন্য কৌশলে ব্যবস্থা করানো হয়। ছাতক প্রকৌশল কার্যালয়ের আরও জিওবি উপ-সহকারী প্রকৌশলী থাকা স্বত্বে উপজেলা প্রকৌশলী, প্রজেক্টে কর্মরত উপ-সহকারীকে ঘুষ দুর্নীতির ও বানিজ্যের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন এবং এই সুবাদে SDIRIIP প্রকল্পে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয়সিংহ ও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কিছুদিন পূর্বে SDIRIIP প্রকল্পে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় সিংহ তার প্রজেক্টের সিল ব্যবহার না করে সরকারি স্টাফ পরিচয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সহায়তায় ছাতক উপজেলা কঠিমার খাল আরসিসি রাস্তা ও জাতুয়া পালপুর রাস্তার সিকিউরিটি প্রদান করে মোটা অংকের অর্থ আদায় করছেন।
জিওবি উপ-সহকারী প্রকৌশলী সিটিউরিটির টাকা প্রদানের ফরমে স্বাক্ষর করেন কিন্তু উনি অতিরিক্ত মুল্য আদায়ের লক্ষ্যে জিওবি স্টাফদের সকল কাজ হতে অব্যাহতি দিয়ে প্রজেক্টের লোক দিয়ে রমরমা ঘুষ বানিজ্য করছেন। এহেন পরিস্থিতিতে ছাতক উপজেলার ঠিকাদারগণ উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও তার ঘুষের হাতিয়ার SDIRIIP প্রকল্পে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঞ্জয় সিংহকে দ্রুত অপসারণ পূর্বক ছাতক উপজেলায় ১জন যোগ্য প্রকৌশলী প্রদানের দাবি সহ তাদের দুর্নীতির বিচার দাবি করেন।
১৫ জুলাই ছাতকের মেসার্স শহীদ ট্রেডার্স,মোঃ সাদেকুর রহমান,মেসার্স অমল কান্তি দে,মেসার্স তালুকদার এন্টার প্রাইজ,মেসার্স সাদিয়া এন্ড মেহজাবিন,মেসার্স লাকি এন্টার প্রাইজ,মেসার্স মাইমুনা ট্রেডার্স,মেসার্স মেহিদী এন্টার প্রাইজ, মেসার্স সনি ট্রেডার্স,মেসার্স রুজিন কনস্ট্রাকশন,মেসার্স হক ট্রেডার্স,মেসার্স শাহ দামড়ী এন্টারপ্রাইজ,মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজ,মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ,মেসার্সআম্মাজান এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে প্রধান প্রকৌশলী সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছাতকের উপজেলা প্রকৌশলী ও এক উপ- সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন ঠিকাদাররা কাজ না করেই বিল নিতে চান। এতে তিনি সহযোগিতা করেন নি।