‘আমি তরে পিটমু, তোরে আমি পিটাইমু তোর কোন বাপে ফিরাইত পারতনায়, জিডি ধরাইতেনি গিয়া ধরা। তুই আমার লগে বহুত বেয়াদবি করছিস, পিটা (তো খাইছস না বেয়াদবের বাচ্চা, কিছু দিনের মধ্যে পিটা খাইবে। পিটা খাইবার লাগি বার চা।’
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এভাবেই একজন স্কুলশিক্ষককে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। ফোনকলের রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নে। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডাক্তার রাজা মিয়া সম্প্রতি চিলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে ফোন করে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেন।
বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ফোনালাপ ভাইরাল হলে শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক জানান, ‘আমাদের স্কুল মাঠে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়া যায়। আমি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করি। এতে তিনি (রাজা মিয়া) বাধা দেন। পরে ইউএনও স্যারের সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাই। এরপর থেকেই তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তাকে তা জানাইনি—এই ‘অপরাধে’ তিনি ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং হুমকি দেন। আমি ও আমার এক সহকর্মী তার দোকানে গিয়ে বিষয়টি বোঝাতে চাইলে উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরদিন তার নাতিকে দিয়ে স্কুলে এসে হুমকি দেওয়ান। আমি আতঙ্কে আছি, কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’
এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন করা হলেও ডাক্তার রাজা মিয়া ফোন রিসিভ করেননি।
জগন্নাথপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার অরূপ কুমার রায় বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমাকে ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষককে দেওয়া গালিগালাজের বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা দেব।’