বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:২৮ অপরাহ্ন

সাদাপাথর লুট: অবশেষে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আদানানকে বদলি

  • প্রকাশের সময় : ৩১/০৮/২০২৫ ০৯:২৮:০৯
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের সংগৃহীত
Share
26

ব্যাপক সমালোচনার পর সাদাপাথর লুট কান্ডে অভিযুক্ত কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনানকে বদলি করা হয়েছে।


 রবিবার (৩১ আগস্ট) তাকে বদলি করা হয় বলে জানান সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান।


তিনি জানান, কোম্পানীগঞ্জের নতুন ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে পুলিশ পরিদর্শক রতন শেখকে।
 

রতন শেখ শরীয়তপুরের শিবচর থানার ওসি হিসেবে কাজ করেছেন। তাছাড়া তিনি ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা পুলিশে কর্মরত আছেন।


এরআগে কোম্পানীগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর লুটের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


সাদপাথরের লুট নিয়ে দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ওসিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে সাদা পাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন।


সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুট নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার মধ্যে গত ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপ পরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে একটি টিম সাদাপাথর পরিদর্শন করে। এরপর তারা ১৬ আগস্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।


প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা মিলিয়ে ৫৩ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।


কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে সাদা পাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন।


প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর প্রতি ট্রাকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট করে লোড করা হয়। পরিবহণ ভাড়া ছাড়া প্রতি ট্রাকের পাথরের দাম ধরা হয় ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতি ট্রাক থেকে দশ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হয়। বাকি ৮১ হাজার টাকা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীরা নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নেয়। এছাড়া প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের জন্য ৫ হাজার টাকা বণ্টন হতো। এছাড়াও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা হতে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়।


যার মধ্যে পুলিশ বিভাগ পায় ৫০০ টাকা এবং প্রশাসন (ডিসি ও ইউএনও) পায় ৫০০ টাকা। পুলিশ নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ট্রাক ও নৌকা থেকে এসব চাঁদা বা অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে।


দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এলাকা থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খনিজসম্পদ অধিদপ্তর, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গত এক বছরে দায়িত্ব পালন করা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি এবং স্থানীয় বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই ওসি  আদানানকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে এর প্রায় ১৫ দিন পর তাকে বদলি করা হলো।


আর নতুন দায়িত্ব পাওয়া রতন শেখ জানান, আমি বিষয়টা শুনেছি, কিন্তু এখনো কোন নোটিশ হাতে পাইনি। নোটিশ পেলে যোগ দিবো।


অপরদিকের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, বদলির বিষয়টি আমি শুনেছি, কিন্তু কোন কাগজ এখনো পাইনি।


সিলেট প্রতিদিন / আরজে


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি