সিলেটে প্রথম স্ত্রীর দায়েরী মামলার স্বামী সুহেল মিয়া ও সতিন রিস্পি আক্তারকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। চলতি বছরের ৪মার্চ স্বামী সুহেল ও সতিন রিস্পি আক্তারের বিরুদ্ধে জালালাবাদ থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দায়ের করেন প্রথম স্ত্রী। জালালাবাদ থানার (মামলা নং-০১)।বেশ কিছুদিন পলাতক থাকার পর মহামান্য হাইকোট থেকে আগাম জামিন নেন আসামি সুহেল ও রিস্পি।
গত ১৭জুন সিলেট দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত আসামি রিম্পি আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ৪জুন সুহেল মিয়াকে জেল হাজতে প্রেরণ করে আদালত, (মামলা নং-৬০/২৫ইং)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দাবি পক্ষের আইনজিবী এ্যাডভোকেট মুজিবুর রমান মুজিব।
সুহেল নবীগঞ্জের শেরপুর পাওয়ার প্লান্ট বিবিয়ানা দক্ষিণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইনম্যান (বি)। তিনি সিলেট জালালাবাদ থানার নোয়া খুরুমখরা গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২০জানুয়ারী ৩নং আসামি বাদির সতিন রিম্পি আক্তারের প্ররোচনায় স্বামী সুহেল বাদীনি (সুহেলের প্রথম স্ত্রীর) কাছে ১৫লক্ষ টাকা যৌতুক দাবির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে মারধর করে মারাত্বক জখম করে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে স্ত্রী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীনিকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করে। বাদীনি জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরী নং-১৩২১ দায়ের করলে তদন্তকারি কর্মকর্তা সত্যতা পেয়ে গত ৯/০২/২০২৫ইং তারিখে জালালাবাদ থানার নন এফ আই আর নং-১৩ আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে আসামীরা আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়।
গত রমজান মাসে বাদীনি তাহার পিত্রালয় থেকে দুই লক্ষ টাকা এনে ঘরে রাখেন। বিষয়টি বাদীনির স্বামী সুহেল জানতে পেরে সমুহ আসামিদের নিয়ে প্রথম স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করে জোর পূর্বক টাকা নেয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে বাদিনীকে টানা হেচড়া ও মারধর করে মারাত্বক জখমপ্রাপ্ত করে। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলার বাদি জানান, ইসলামি সরিয়াহ মোতাবেক ১৯৯৭সালে সুহেলের সাথে তার বিবাহ হয়। বিবাহের পর জানতে ও দেখতে পাই সুহেল একজন চরিত্রহীন, নেশাগ্রস্ত লোক। ছেলে মেয়ের কথা ভেবে নানা নির্যাতনের পরও ঘর সংসার করি। ২০১৩সালে হঠাৎ করে একটি চাকমা বিবাহিত তরুনীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার অজান্তে ঢাকায় নিয়ে কোর্টম্যারিজ করে। আমার অনুমতি ছাড়া বিবাহ করায় আমি সুহেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। সেই মামলায় সুহেল হাজতবাসও করে। আত্মীয় স্বজন ও আমার শাশুড়ির চাপে সুহেলকে জেল থেকে বের করি। কিছু দিন আমার সাথে ভাল ব্যবহার করলেও ২য় স্ত্রীর প্ররোচনায় আমাকে যৌতুকের জন্য মারধর করতে থাকে। যাতে মারধর খেয়ে আমি পালিয়ে যাই। অনেকবার সালিশ বৈঠকে মুসলেকা দিয়েছে সুহেল। তাতেও সে পরিবর্তন হয়নি। এ নিয়ে সুহেলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে স্বামী সুহেলের ভাড়াটে গোন্ডা বাহিনীর হুমকি ধামকিতে আমার নিস্পাপ কিশোরিকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় জীবনের ঝুকি নিয়ে আদালতে আসা যাওয়া করছি। আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কারনা করছি।