সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরে বিরাজ করছে প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম। সকাল গড়াতে না গড়াতেই সূর্যের তাপ সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। ঘরে-বাইরে কোথাও নেই স্বস্তি। তাপদাহের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সর্বসাধারণ। আর সবচেয়ে বেশি ভুগছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষজন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, দিনমজুর, রিকশাচালক ও নিম্নআয়ের মানুষজন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন। গরমে রাস্তাঘাটে যান চলাচল কমে এসেছে। বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও কম। এরমধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘরে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে উঠছে। তীব্র গরমে অনেকেই কাজ বন্ধ রেখেছেন বা সীমিত সময়ের জন্য কাজ করছেন। একদিকে উপার্জন কমে গেছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
স্থানীয় রিকশাচালক ও দিনমজুরেরা বলেন, এই গরমে শরীর আর চলে না। রোদে রিকশা চালাতে গেলেই মাথা ঘোরে, বুকে ব্যথা লাগে। অনেকেই অর্ধেক দিন কাজ করে ফিরে যায়। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো পেটে ভাত জোটে না। দিনমজুরের জীবন এমনিতেই কষ্টের, তার উপর এই রকম গরমে কাজ করাটাই এখন একেকদিন যুদ্ধ। সারা গায়ে ঘাম, পানি ছাড়া মুখে একফোঁটা শান্তিও নাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু, বয়স্ক ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা মানুষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হাসান বলেন, এই গরমে অনেকেই জ্বর, ডায়রিয়া ও দুর্বলতায় ভুগছেন। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। নিজেরা সতর্ক থাকাটাই এখন প্রধান করণীয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হলে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন শরিফী বলেন, গরমের এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতন থাকা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানি পান করা, অতিরিক্ত রোদ থেকে বিরত থাকা, এবং হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য সেবা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।