সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ উঠে এক স্থানীয় মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাতভর বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শেষে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
রবিবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে হামলার শিকার হন ভুক্তভোগী শিক্ষক । ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা সেখানে জড়ো হন এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন। পরে মিছিলসহ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
অবরোধের ফলে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান স্থানীয় বাসিন্দা ও গাড়িচালকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। শিক্ষার্থীরা হামলাকারীকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে দুই শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা হলেন পিএমই বিভাগের শাফি আল মাহদি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের খলিলুর রহমান। তাদেরকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লাঠিচার্জের ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভূয়া ভূয়া স্লোগান দেন। তারা অভিযোগ করেন, সড়ক ছেড়ে দেওয়ার পরও তাদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করা হয়।
ঘটনাস্থলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোখলেছুর রহমান বলেন, হামলাকারীর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। অভিযুক্ত আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
রাত ১টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন এবং তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মানিত শিক্ষকের নিকট উক্ত ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা; শিক্ষকের মানহানি ও শারীরিক লাঞ্ছনার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; ঘটনার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে থাকা মোটরসাইকেলটি জব্দ করা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোখলেছুর রহমান বলেন, রাত ১টায় দিকে হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে উঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাড়িতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকীকে রড দিয়ে মারতে তেড়ে আসেন ইনজামামুল হক নামের স্থানীয় এক যুবক। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষককের পা ধরে ক্ষমা চান ওই যুবক।