সিলেটের জকিগঞ্জে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একই কম্পাউন্ডে ধারালো দা হাতে মহড়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া এই ছবি দেখে হতবাক সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে হাফছা মজুমদার মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সাজ্জাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতন এবং প্রতিভা নিবাস আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে। শুক্রবার রাত থেকে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়— ধারালো দা হাতে এক যুবক দাঁড়িয়ে আছে, আর পেছনে সারিবদ্ধভাবে অন্তত ১২ জন যুবক অবস্থান করছে।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, মূলত টিকটকের জন্য এ ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে অস্ত্র হাতে এমন দৃশ্যের উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে মেয়েদের কলেজের সামনে এ ধরনের মহড়া উদ্বেগ ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মহিলা কলেজ ও আবাসিক প্রতিষ্ঠানের মতো সুরক্ষিত জায়গায় বহিরাগতরা কীভাবে প্রবেশ করল? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে এমন ভীতিকর মহড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম প্রশ্ন তোলে।”
সাজ্জাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসীম ভৌমিক বলেন, “প্রতিষ্ঠান ছুটির পর বা বন্ধের দিনে হয়তো এ ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এ ধরনের ভীতিকর ভিডিও ধারণ গুরুতর অপরাধ। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাফছা মজুমদার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খালেদ মহিউদ্দিন আজাদ বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠান শুধু শিক্ষার নয়, এটি শৃঙ্খলা ও মর্যাদার প্রতীক। কিছু ব্যক্তি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ভীতিকর ও নিন্দনীয় ভিডিও প্রচার করেছে, যা শিক্ষাঙ্গনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে রোববার জরুরি বৈঠকে করণীয় নির্ধারণ হবে।
তবে সচেতন মহল বলছে, শিক্ষাঙ্গনে এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড দমনে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না জানান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।