সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করার জোরালো দাবিতে বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো. রেজা-উন-নবীর কাছে এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে বিভাগীয় কমিশনার এ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বাস্তবায়নে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রাচীন জনপদ বিয়ানীবাজারের প্রায় পৌনে তিন লক্ষ মানুষের জন্য স্থলপথই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এখানে রেলপথ না থাকায়, সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কই বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও বড়লেখা উপজেলার বাসিন্দাদের বিভাগীয় শহরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সংযোগের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল একনেক (ECNEC) সভায় ‘সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ককে চারলেনের আধুনিক মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারিত হয় ৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ সহায়তা দিচ্ছে ২ হাজার ৮৮৬ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় আরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে- ২টি সার্ভিস লেন, ৩টি সেতু, ৩১টি কালভার্ট, ১টি ফ্লাইওভার, ৪টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি ওভারপাস, ২টি আন্ডারপাস, ৭টি ফুটপাত এবং ১টি টোলপ্লাজা। বিশেষভাবে, কুশিয়ারা নদীর ওপর ৬০ মিটার দীর্ঘ, ২১ মিটার প্রশস্ত এবং ৪০ মিটার উঁচু একটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি ডা. এম ফয়েজ আহমদ স্মারকলিপিতে বলেন, 'প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৭ হলেও, জমি অধিগ্রহণে দেরি, সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন এবং অজানা কারণে প্রকল্পের গতি থমকে গেছে। এই জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রকল্প যেন অযৌক্তিক কারণে বন্ধ না হয়ে যায়- সেই দাবি জানাই।'
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুবায়ের আহমেদ খান বলেন, 'শেওলা স্থলবন্দর সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কের শেষ প্রান্তে অবস্থিত এবং এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০০ ট্রাক চলাচল করে। প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন নয়, বরং দেশের অর্থনীতিতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।'
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি ডা. এম ফয়েজ আহমদ, সিনিয়র সহসভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুবায়ের আহমেদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আহমদ রেজা, মাহবুব আহমদ মুক্তা, মো. শহীদুল হাসান, আ.ফ.ম আরিফ, আজমল হোসেন চৌধুরী ওয়েছ ও ইসমত ইবনে ইসহাক সানজিদ।