জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে বৈষম্যবিরোধীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রদলের তোপের মুখে পড়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.এম. সরওয়ারউদ্দীন চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকালে জুলাই অভ্যূত্থান দিবসের আলোচনা সভা শুরু হলে সভা বয়কট করেন ছাত্রদলের নেতাকর্র্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা যায়, আজ জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটেরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন উপাচার্য। সভা শেষে তিনি কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে রওনা হলে, অর্জুনতলায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন উপাচার্য।
উপাচার্যের গাড়ি আটককালে সেখানে শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান, সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকারসহ ২০-২৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’, ‘কে বলে রে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়’, ‘লাখ শহীদের রক্তে কেনা দেশটা কারো বাপের না’, ‘জুলাইয়ের গাদ্দারেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভুয়া ভুয়া প্রশাসন ভুয়া’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় উপাচার্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে বসার আশ্বাস দেন এবং সবাইকে দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান পৌঁছান ও বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এসময় প্রক্টরের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোলচত্বরে অবস্থান নেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার বলেন, ৫ আগস্টের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ছিল দল মত নির্বিশেষে সবার। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তারা যখন রাজনীতি কার্যক্রম শুরু করে তখনেই এই ব্যানার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে সবকিছুতে সুবিধা দিচ্ছে। লোকবল সংকট থাকতে পারে। কিন্তু ওনারা তো সামাজিক সাংস্কৃতিক ও দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিবেন, যারা জুলাই আগষ্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। তাদের সকলকে নিয়ে তো আয়োজনটি সম্পন্ন করতে পারত। আমরা এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।
নাঈম সরকার আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসন জুলাই অভ্যূত্থান দিবসের অনুষ্ঠানের দাওয়াত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন। একটি নিদিষ্ঠ সংগঠন কেন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সেটা আমরা জানতে চাই। যে পর্যন্ত না প্রশাসন কারণ বলবে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্রদল গোলচত্বর থেকে নড়বে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আলোচনা সভার আয়োজক কমিটির হয়তো কিছু ব্যতয় ঘটিয়েছেন। বিষয়টির কারণে হয়তো ছাত্রদলের ছেলেরা রাগ করেছে। সংশিষ্ট কমিটির সাথে কথা বলে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে জানা যাবে।’