বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ডের (USARPAC) যৌথ অংশগ্রহণে এক্সারসাইজ ‘টাইগার লাইটনিং (টিএল)-২০২৫’ সমাপনী অনুষ্ঠান সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৪ জুলাই শুরু হওয়া এক সপ্তাহব্যাপী এ মহড়াটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ডের যৌথ অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ মহড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ড এর ৬৬ জন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের ১০০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিওসি ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার সিলেট এরিয়া এবং ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স, অ্যাম্বাসেডর ট্রেসি এ্যান জ্যাকবসন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা বিধান, সন্ত্রাস দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোনো বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় বদ্ধপরিকর এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য অংশীদারদের সঙ্গে সমবেতভাবে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কৌশলগত যৌথ আভিযানিক সক্ষমতা উন্নয়ন এবং প্রস্তুতি জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং-২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এ মহড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ডে ৬৬ জন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের ১০০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকসন বলেন, ‘ইউএস-বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যৌথ প্রশিক্ষণ “টাইগার লাইটনিং”দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার একটি প্রতীক, যা বঙ্গোপসাগর ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা, শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় দুই দেশের লক্ষ্যকে ধারণ করে। এই মহড়ার মাধ্যমে মার্কিন সেনারা বিশ্বে শান্তিরক্ষায় অসাধারণ দক্ষতার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন।’
বাংলাদেশ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণে বিশ্বের শীর্ষ ৩ দেশের মধ্যে থাকে এবং মানের দিক থেকে শীর্ষস্থান অধিকার করে, আর এসকল মিশনে আছেন ১৮০০ নারী সেনাসদস্যও।
মহড়ার প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণকারীরা সমন্বয়, প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নানাবিধ কৌশলগত ও প্রায়োগিক কার্যক্রমে অংশ নেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে এ অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সদস্যকে অনুশীলন সফলভাবে সম্পন্ন করার স্বীকৃতিস্বরূপ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এছাড়াও, স্মারক হিসেবে প্রত্যেককে ইনসিগনিয়া দেয়া হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সিলেট অঞ্চলের সব কমান্ডার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা সদর এবং সিলেট অঞ্চলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কার্যকরী অবদান রাখবে।