সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ৭ নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম নিবাসী আবু সুফিয়ানকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ৮ আসামীর প্রত্যেককে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে চার জনকে ১০ বছর করে এবং আরো চার জনকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন সিলেটের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল আমিন। রায় ঘোষণার সময় ৬ আসামী উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। বাকি দুই আসামী পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুল আলম বকুল এবং মামলার বাদি আবু সুফিয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ভুক্তভোগী সুফিয়ান আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
রায়ে আদালত এই মামলার ৮ আসামীর প্রত্যেককে অপহরণের দায়ে দণ্ডবিধির ৩৬৭ ধারায় ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন। তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, আসামীদের মধ্য থেকে চার জনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাদিকে মারধর করার জন্য দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়।
মোট ১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলেন- মামলার ১ নং আসামী বাণীগ্রামের মৃত আজই মিয়ার ছেলে জয়নাল হোসেন, ছৈদ আলীর ছেলে এখলাছুর রহমান, রফিক আহমদের ছেলে হারুন রশীদ এবং ফখর উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস। আসামী জয়নাল পলাতক অবস্থায় আছে।
আর ৫ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাণীগ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে তোতা মিয়া, একই গ্রামের রফিক আহমদের ছেলে বিলাল আহমদ, ব্রাহ্মণগ্রামের মৃত করিম উদ্দিন কুছুরের ছেলে ফরিদ উদ্দিন এবং একই গ্রামের মানিক মেম্বারের ছেলে ফয়সল আহমদ। আসামী বিলাল পলাতক রয়েছে।
এই মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে তিন জন তথা হারুন রশিদ, বিলাল আহমদ ও তোতা মিয়া তাদের ভাতিজা কামিল হত্যা মামলারও আসামী।
উল্লেখ্য, সাজাপ্রাপ্ত ১ নং আসামী জয়নালের সাথে পুর্ব বিরোধের জের ধরে ২০১৯ সালের ২২ জুন তারিখ সন্ধ্যার পর আবু সুফিয়ানকে গাছবাড়ী বাজার থেকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়। তাকে প্রাণের মারা উদ্দেশ্যে দেশীয় ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপুর্যপুরী আক্রমণ করা হয়।
একটা পর্যায়ে আসামীরা আবু সুফিয়ানকে মৃত ভেবে জয়নাল হোসেনের বাড়ির পাশে ফেলে চলে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করার পর স্থানীয়রা হাসপাতালে পাঠান। পরে আবু সুফিয়ান কানাইঘাট থানায় মামলা করেন, যার নং জিআর ১৮৩/২০১৯।