বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যের এক অম্লান প্রতিভা — সৈয়দ আবুল কাশেম মিলু — আমাদের মাঝে আর নেই। তাঁর প্রয়াণে বাংলা সাহিত্য-পরিমণ্ডল গভীরভাবে শোকাহত।
মিলু কাশেম ছিলেন এমন একজন সাহিত্যিক যাঁর ছড়াগুলো সাধারণ মানুষের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। হাসি, মর্ম ও জীবনবোধ মিশিয়ে যে ছড়াসাহিত্য রচনা করতেন তিনি — তা শুধু পাঠের জন্য নয়, অনুভবের জন্যও ছিলো অনন্য। ছোট ছোট শব্দে বড় বড় বর্ণনা, সাধারণ জীবনের মাঝেই গোপন সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া — এসবই তাঁর লেখার বৈশিষ্ট্য ছিল।
তিনি ছিলেন ভ্রমণপ্রেমী — পৃথিবীর নানা দেশ ভ্রমণ করেছেন, বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মানুষের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাঁর ছড়ায় ও কথোপকথনে পরিলক্ষিত হতো — পাঠক পেয়ে যেত এক রঙিন গল্পের খোলক, অন্য দেশের রং, মনভোলানো দৃশ্য ও জীবনকথা। এই মহান মানুষের ভ্রমণসঙ্গী হয়ে ঘুরেছি ভারতের নানা পথ। তিনিই নিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার পরিচ্ছন্ন গ্রাম দেখাতে। সবই আজ কেবল স্মৃতি।
তাঁর সাহিত্যসৃষ্টি শুধু ছড়াই নয়; তিনি ছিলেন বন্ধুবৎসল, মিথস্ক্রিয়াশীল ব্যক্তি, যাঁর কথা সাহিত্যসভার মঞ্চে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মঞ্চ পেত। পাঠকপ্রিয়, বন্ধুবান্ধব ও সহযোদ্ধারা তাঁকে স্মরণ করবে — না শুধুই তাঁর লেখার জন্য, বরং তাঁর ভাবনা ও ভ্রমণ-সংস্কৃতির জন্যও। তিনি উঠতি তরুণ-তরুনীদের গ্রন্থ পাঠে আগ্রহ যোগাতেন অনায়াসে।
আজ আমরা তাঁকে হারিয়েছি, কিন্তু মিলু কাশেম-এর লেখা, তাঁর ছড়ার ছাপ, তাঁর ভ্রমণকাহিনী আমাদের স্মৃতির পাতায় চির অম্লান থাকবে। তাঁর জীবন থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা ও ভালোবাসা বিজড়িত স্মৃতি আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।
আমরা তাঁর আত্মার শান্তি ও পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য মাগফেরাত প্রার্থনা করছি। মিলু কাশেম, আপনার কাব্যিক অপেক্ষা যে আজ শেষ — আপনি হারালেও, আপনার ছন্দ চিরন্তন। আপনি ভালো থাকুন, ঘোমান পরম শান্তিতে।
আপনার প্রতি আমার অন্তিম শ্রদ্ধা মিলু ভাই-
বশির আহমদ জুয়েল
সম্পাদকঃ ছন্দালাপ




প্রতিদিন ডেস্ক



