শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
বেরিয়ে আসছে বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের খবর!

বিশ্বনাথে মেয়র-কাউন্সিলর দ্বন্দ্বে চলছে ভার্চুয়াল বাহাস

  • প্রকাশের সময় : ২০/০৪/২০২৪ ০১:২৮:২৮
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের মুহিবুর রহমান ও রফিক মিয়া
Share
16

সিলেটের বিশ্বনাথে পৌর নির্বাচনের মাত্র একটি বছর যেতে না যেতেই লুটপাটের মহোৎসবে পরিণত হয়েছে ‘বিশ্বনাথ পৌরসভা’। আর এই লুটপাটের প্রতিযোগীতায় রয়েছেন পৌরসভার জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি মেয়র ও কাউন্সিলররা। তাদের এই প্রতিযোগীতায় লুটপাটের অংশ কম-বেশী নিয়ে নিজেদের মধ্য থেকেই প্রকাশ পাচ্ছে দুর্নীতির চিত্র। একদিকে রয়েছেন মেয়র মুহিবুর রহমান একা আর অপরদিকে মেয়রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন দুই প্যানেল মেয়র’সহ সাতজন বাউন্সিলর। আর এই ৭জনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্যানেল মেয়র-১ রফিক মিয়া।


দীর্ঘ কয়েকমাস ধরেই তাদের মধ্যে এই দ্বন্ধ চলে আসছে। এতদিন ভেতরে ভেতরে চলে আসলেও সম্প্রতি তাদের এই দ্বন্দ্ব জনসম্মুখে চলে এসেছে। শুধু জনসম্মুখেই নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে দেখছে গোটা বিশ্ব। তবে এই ফেসবুক পেজগুলো কোনো জনসাধারণের নয়, পেজগুলোর হচ্ছে- একটি স্বয়ং মেয়র মুহিবুর রহমানের অপরটি হচ্ছে কাউন্সিলর মোঃ শামীম নুর নামে।


মেয়র মুহিবুর রহমান তার পেজে ভিডিওতে বলতে দেখা গেছে প্যানেল মেয়র-১ কাউন্সিলর রফিক মিয়া বিভিন্ন বরাদ্দ মেরে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আর এদিকে রফিক মিয়া বলছেন মেয়র বরাদ্দের টাকা মেরে আত্মসাৎ করেছেন। ফেসবুকে তাদের এই টাকা আত্মসাতের ভার্চুয়ার বাহাস দেখে হতবাক হচ্ছে সুশিল সমাজের লোকজনসহ জনসাধরণ।


গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মেয়র মুহিবুর রহমান নামের ফেসবুক পেজে দেখা যায় ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিক হাসান (রফিক মিয়া) একটি রাস্তার টিআর কর্মসূচীর ১লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে ভিডিও ছেড়েছেন মুহিবুর রহমান। অপরদিকে পরদিন শুক্রবার কাউন্সিলর মোঃ শামীম নুর’র ফেসবুক পেজে একটি ভিডিওতে দেখা যায় মেয়র সাহেবের দুর্নীতির সচিত্র ফিরিস্তি পর্ব-১ তুলে ধরেছেন প্যানেল মেয়র রফিক মিয়া


তিনি এই ভিডিওতে বলেছেন বিশ্বনাথ পুরান বাজারের গরুর হাটে অনুমান মাত্র ৫থেকে ৬ লাখ টাকার ইটসলিং কাজ করে প্রায় ২৩ লাখ টাকা বিল তুলেছেন। এছাড়াও মেয়র কোনো প্রকার রেজুলেশন অথবা টেন্ডার ছাড়া এই কাজ করেছেন। এই ভিডিওতে দেখা গেছে মেয়রকে অনাস্তাকারী আরও ৬জন কাউন্সিলর রয়েছেন।


তারা হচ্ছেন- প্যানেল মেয়র-২ সংরক্ষিত কাউন্সিলর সাবিনা বেগম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রাসনা বেগম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর লাকী বেগম, কাউন্সিলর রাজুক মিয়া রাজ্জাক, কাউন্সিলর জহুর আলী ও মোঃ শামীম আহমদ।


এভাবে একদিকে কাউন্সিলর রফিক মিয়া কর্তৃক বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের খবর ফেসবুকে তুল ধরছেন মেয়র আর অন্যদিকে মেয়র কর্তৃক বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের খবর তুলে ধরছেন রফিক মিয়াসহ ৭জন কাউন্সিলর। তবে উভয় পক্ষের এই ভার্চুয়াল বাহাস কোথায় গিয়ে শেষ হয় সেটা এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।


এদিকে পাহাড় সমান মেয়রের দুর্নীতি ও অশুভ আচরনের ফিরিস্তি ধরে তুলে এবং অনাস্থা প্রস্তাব এনে দু’জন প্যানেল মেয়রসহ ৭জন কাউন্সিলর লিখিত আবেদন করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানী সরকার বিভাগের সচিবের কাছে তারা এই লিখিত আবেদন দালিখিল করেন। পরদিন মেয়রের অপসারণ চেয়ে এই সাত কাউন্সিলর সংবাদ সম্মেলনও করেন। এরপর দেখা যায় উভয় পক্ষই বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের খবর নিয়ে নেমেছেন ভার্চুয়াল বাহাসে।


জানতে চাইলে মেয়র মুহিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।


আর প্যানেল মেয়র-১ রফিক মিয়া বলেন, `মেয়র সাহেব আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন সেটা মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ আমাকে দেয়া টিআর প্রকল্পের কাজ তদন্ত করে বিল দিয়েছে পিআইও অফিস। আর মেয়র নিজের ক্ষমতা বলে টেন্ডার না করে তার পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করান এবং ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের বিলও তিনি করে। কারণ একাজ গুলোর চেগের ক্ষমতা একমাত্র মেয়রের রয়েছে। তাই তার ইচ্ছেমতো অধিক টাকার প্রকল্প করে তিনি নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে কাজ করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন'।


সিলেট প্রতিদিন / এএ/এমএনআই


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি