বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫১ অপরাহ্ন

কনস্টেবলের বিরুদ্ধে স্বামী পরিত্যক্তা তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের অভিযোগ

  • প্রকাশের সময় : ০৯/০৪/২০২৫ ০৩:৪৭:০৮
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের ছবি : সিলেট প্রতিদিন
Share
99

বিয়ের প্রলোভনে স্বামী পরিত্যক্তা ও তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সিলেট জেলা পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ'র (৩০) বিরুদ্ধে।


ধর্ষণের পাশাপাশি নানা প্রলোভনে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ওই ভুক্তভোগী নারী।


এই ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করতে চাইলেও তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। পরে তিনি জেলা পুলিশের শরণাপন্ন হয়ে গত ১৭ মার্চ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।


অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার আওতাধীন সারকারখানা পুলিশ ক্যাম্পে কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি একটি অভিযানে আহত হওয়ায় বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর ভুক্তভোগী নারী সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার বাসিন্দা।


লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না নেওয়ায় ও হুমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই ভুক্তভোগী।  


পুলিশ বলছে-অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুন মাসে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় পুলিশ কনস্টেবল আবু সাঈদের। ওই নারী স্বামী পরিত্যাক্তা ও তিন সন্তানের মা জেনেও সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন লোভ-লালসার ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীর বাসায় আসা-যাওয়া শুরু করেন আবু সাঈদ। সেই সুযোগে তাকে ধর্ষণ করেন ওই পুলিশ সদস্য। একপর্যায়ে বিয়ে করে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারীর সহায়তায় একটি পাসপোর্টও তৈরি করেন ওই কনস্টেবল।


আরও জানা যায়, ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসার অনুমতি পেয়ে আবু সাঈদ ভুক্তভোগীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা শুরু করেন। এসময় ভুক্তভোগী নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা টালবাহানা শুরু করেন সাঈদ। বিষয়টি পুলিশকে অবগত করার কথা বললে গত ১৪ মার্চ বিকেলে ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন আবু সাঈদ। কিন্তু পরদিন ১৫ মার্চ রাতে মুঠোফোনে কল দিয়ে বিয়ে করবেন না বলে জানান। এতে ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বললে গালিগালাজ করেন ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এছাড়াও ভুক্তভোগী নারীর কিছু আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল করার হুমকি দেন সাঈদ। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী নারী।


ভুক্তভোগী নারীর জানান, এ ঘটনার পর তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা। পরে তিনি গত ১৭ মার্চ সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।


তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, গত ২৩ মার্চ দিবাগত রাতে ১০-১৫জন যুবক তার বাসায় গিয়ে তাকে হুমকি দেয়। যার ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে।


এদিকে, গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আবু সাঈদ বলেন, এটি সাজানো অভিযোগ। আমার সঙ্গে এ ধরনের কিছুই হয়নি। তার (ভুক্তভোগী) সঙ্গে আমার ধর্মের (পাতানো) ভাই-বোন সম্পর্ক। পরে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।


থানায় মামলা না নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও কল রিসিভ করেননি।


এব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট জেলা সহকারী পুলিশ সুপার ও মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো.সম্রাট তালুকদার বলেন, এ ধরনের একটা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সিলেট প্রতিদিন / এমএ


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি