বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

এবার জরুরি খাদ্য সহায়তাও বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র

  • প্রকাশের সময় : ০৮/০৪/২০২৫ ১১:৪৩:২৫
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের ফাইল ছবি
Share
38

এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে ঝুঁকিতে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।


জরুরি খাদ্য সহায়তা হিসেবে মূলত আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং আরও ১১টি দরিদ্র দেশে লাখ লাখ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) জরুরি কর্মসূচিতে অর্থায়ন করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র।


ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত এসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখ লাখ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে বলে সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েডেট প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন।


খাদ্য সহায়তার বৃহত্তম সরবরাহকারী বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে নতুন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।


দুই মার্কিন কর্মকর্তা, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এবং এপির হাতে আসা নথিপত্র থেকে জানা গেছে যে, অপ্রত্যাশিত এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পরিচালিত সর্বশেষ কিছু মানবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে।


ডব্লিউএফপি এক্সের ওই পোস্টে বলেছে, নতুন এই সিদ্ধান্তটি চরম ক্ষুধা ও অনাহারে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমান হতে পারে।


সংস্থাটি বলেছে, জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচির জন্য ‘অব্যাহত সহায়তার আহ্বান জানাতে’ তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং অতীতের অবদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দাতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে।


মার্কিন বৈদেশিক সহায়তার ব্যাপক কাটছাঁটের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানে জরুরি খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কাটছাঁট করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তবে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির শীর্ষ লেফটেন্যান্ট জেরেমি লিউইনের নির্দেশে ‌‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সুবিধার জন্য’ প্রকল্পগুলো বাতিল করা হচ্ছে। ইউএসএআইডি প্রোগ্রামগুলো বাদ দেওয়ার তত্ত্বাবধানের জন্যও নিযুক্ত ছিলেন এই জেরেমি লিউন।


সহায়তা বন্ধের ব্যাপক প্রভাব

মানবিক সহায়তাদানকারী গোষ্ঠীগুলোর মতে, ডব্লিউএফপি কর্মসূচির আকস্মিক সমাপ্তির সিদ্ধান্তটি হুমকির মুখে ফেলেছে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে। বৈশ্বিক বাস্তবতায় এসব জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই এ ধরনের খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।


যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দাতা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে মানবিক সংকট নিরসনের প্রচেষ্টাকে তাদের কৌশলগত স্বার্থে গণ অভিবাসন, সংঘাত ও চরমপন্থা দমন করে আসছে, যা সম্পদ করায়ত্ত করার জন্য হতে পারে।


ডব্লিউএফপির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, এই কাটছাঁট ‘বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।’


রুবিও গত মাসে কংগ্রেস ও আদালতকে জানিয়েছেন, ইউএসএআইডি চুক্তি কাটছাঁট করা শেষ হয়েছে। এর সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রায় এক হাজার কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও পাঁচ হাজারেরও বেশি কমূসূচি বাদ দেওয়া হয়েছে।


ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডির বিরুদ্ধে অপচয় এবং উদারপন্থি উদ্দেশ্যকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।


এপির হাতে আসা স্টেট ডিপার্টমেন্টের নথিতে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইউএন পপুলেশন ফান্ড পরিচালিত দুটি নতুন বাতিল হওয়া চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থদাতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই খাদ্য সংস্থাকে অনুদানের ৯৮০ কোটি ডলারের মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলার সরবরাহ করেছিল দেশটি।


সিলেট প্রতিদিন / এএ


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি