শাহবাগী নেত্রী লাকি আক্তারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে শাহবাগের ‘কসাই’ খ্যাত লাকি আক্তারকে ও দেশদ্রোহী সেবাদাসদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ২টা নাগাদ 'জুলাই জনতার মানববন্ধন ও মিছিল' শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ শাবিপ্রবি শাখা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর এলাকা থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো গোল চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় ‘ল তে লাকী, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘আমার ভাই কবরে, লাকী কেন বাহিরে’, ‘আমার সোনার বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই’, ‘শাহবাগ না জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, একটা একটা শাহাবাগী ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর ’, ‘শাহবাগী হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের রায়হান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সজিব মিয়া, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাবিপ্রবির ইনকিলাব মঞ্চের প্রধান শোয়াইব আহমেদ, গণিত বিভাগের শেখ ওবায়দুল্লাহ, অর্থনীতি বিভাগের আবরার বিন সেলিম ও কামরুজ্জামান এবং পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের আরমান প্রমুখ।
অর্থনীতি বিভাগের আবরার বিন সেলিম শাপলা চত্বরে গণহত্যায় শহীদ বুয়েটের শিক্ষার্থী রেহানের বোনের ফেসবুক পোস্টের রেফারেন্সে দিয়ে বলেন, শাপলার গণহত্যার দায় পুরোটাই শাহবাগের। গণহত্যা সংগঠিত হওয়ার পর শাহবাগ যে উল্লাস করেছে তা হয়ত আপনারা ভুলে গেছেন। শাহবাগই প্রথম মব কালচার তৈরি করেছে। শাহবাগ থেকেই প্রথম বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দাবি উত্থাপিত হয়েছে। শাপলার গণহত্যা জুলাই বিপ্লবের মূল শক্তি।
এসময় তিনি আরো বলেন, একটার পর একটা স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর ও কীভাবে যুদ্ধাপরাধের দায় দিয়ে দেশকে রাজনৈতিক নেতৃত্বশূন্য করার একটা পাঁয়তারা করেছিল। প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোকে নেতৃত্বশূন্য ও পরবর্তীকালে আলেম উলামার গায়ে হাত তুলা হয়। হাসিনার এই ইসলাম ফোব প্রজেক্ট সবটাই গড়ে উঠেছিল শাহবাগের হাত ধরে।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সজিব মিয়া বলেন, যখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয় আমরাই প্রথম আমাদের বোনদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু একদল গোষ্টি এই ব্যানারকে কেন্দ্র করে তাদের স্বার্থান্বেষী বক্তব্যকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ চাপ দেওয়ার পরও একদল গোষ্টি সেটাকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে ধর্ষণ গুলো হচ্ছে অধিকাংশ পরিবারকেন্দ্রিক। পরিবারের অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রীয় সরকার দিতে পারবে? আমাদের মূল দাবি হচ্ছে সরকারকে চাপ দিয়ে ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা । সেটাকে এককভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উপর চাপিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।
তিনি যোগ করেন, ২০১৩ সালের যে বিচার ব্যবস্থা সেটাকে তৎকালীন বিচারপতি এসকে সিনহা প্রহসনের বিচার ব্যবস্থা বলেছেন। সেই বিচার ব্যবস্থাকে কৌশলে আবারো ফিরিয়ে নিয়ে আসতে চেষ্টা করছে। যে কোনো ঘটনা তদন্তের পূর্বেই মিডিয়ার মাধ্যমেই জাস্টিফাই করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, এই বাংলায় যেমন ধর্ষকের স্থান হবে না তেমনি কালচারাল ফ্যাসিস্টের ও স্থান হবে না।