সিলেটের বিশ্বনাথে ছেলের অত্যাচার কান্ডে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন বাবা-মা। পাষন্ড এই ছেলে কথায় কথায় বাবা-মায়ের ওপর চালায় অত্যাচার। পরিবারের কেউ প্রতিহত করতে গেলেও তাদের ওপর চড়াও হয়ে ওঠেন এই ছেলে। তিনি উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম আহমদ (৪০)।
কয়েক বছর ধরে দেশে অবস্থান করে বাবার জমি জোর পূর্বক ভোগ দখল করে আসছেন। তার এমন অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রায় ৬ মাস পূর্বে বাবা-মা তাকে জেল হাজতেও প্রেরণ করেন। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে শিমগাছ কাটা নিয়ে অপর সৌদি আরব প্রবাসী বড় ভাই শামীম আহমদ (৪২) এর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ‘দা’ হাতে নিয়ে কুপানোর জন্য প্রস্তুতি নেন। এসময় বাবা-মায়ের নির্দেশে তাকে কৌশলে ধরে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন পরিবারের ভাই ভাতিজারা।
এনিয়ে একটি ভিডিও সামাজিকে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
শামীম আহমদ ও সেলিম আহমদের মা নেহার বেগম (৭০) ও বাবা সফিক মিয়া (৯০) জানান, তাদের দ্বিতীয় ছেলে সেলিম আহমদ ছিল সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশে অবস্থান করে মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদ করে আসছে। এনিয়ে প্রায় ৬মাস পূর্বে সেলিম আহমদের উপর মা-বাবা অতিষ্ট হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়ে তাকে জেল হাজতেও পাঠান। কিন্তু তিনি জেল থেকে বেরিয়ে এসে ফের ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা ও দাদার জমি জোর করে একাই চাষাবাদের মাধ্যমে ভোগ দখল করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৮মার্চ) বসত ঘরে রঙ করার সময় শিমগাছ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে ওই গাছ কেটে দেন সেলিম আহমদের বড় ভাই শামীম আহমদ। এসময় সেলিম আহমদ বড় ভাই শামীম আহমদকে কুপানোর জন্য হাতে ‘দা’ নিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। এক পর্যায়ে মা-বাবা নির্দেশ দিলে বড় ভাই শামীম আহমদ, ছোট ভাই ডালিম আহমদ ও শামীম আহমদের ছেলে ইসমাইল আহমদ রেদুয়ান (১৯) কৌশলে সেলিম আহমদকে ধরে হাত-পা বেঁধে পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ সেলিম আহমদকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরন করে। কিন্তু এ ঘটনায় পরদিন সেলিম আহমদের স্ত্রী হুছনা বেগম (৩৮) বাদী হয়ে পরিবারের ৪জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-(৬)। মামলা দায়ের পর রাতে শামীম আহমদের স্ত্রী সোনারা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
ছেলের এমন হয়রানী আর অত্যাচার থেকে বাঁচতে চান মা-বাবা।
মামলার বাদী হুছনা বেগমের বক্তব্য নিতে গেলে তার ঘরের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।