বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

‘আজহারকে মুক্তি না দিলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায় নিতে হবে’

  • প্রকাশের সময় : ১৮/০২/২০২৫ ০৭:২৪:৫৫
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের ছবি: সিলেট প্রতিদিন
Share
35

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ছাত্র জনতার রক্তাক্ত গণ অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। প্রধান বিচারপতিকেও পালাতে হয়েছে। জুডিশিয়াল কিলারদের প্রহসনের বিচারে এটিএম আজহারুল ইসলামকে এখনো কারাগারে কেন জাতি জানতে চায়। আজহারকে মুক্তি না দেয়া হয় তাহলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী থাকতে হবে।


তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে তৎকালীন বিরোধী দলের সাজাপ্রাপ্ত সকলেই মুক্ত হয়েছেন। তাহলে আজহার এখনো জেলে কেনো? ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্টকে বিদায় করে আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন আর আজহার জেলে থাকবে তা হবে না। ফ্যাসিস্টের যেসব দোসররা সরকারের ভেতরে বাইরে রয়েছে আমরা তাদের চিনি। তারা আজহারের মুক্তি বাধাগ্রস্থ করছে। এদের সরকার থেকে বিদায় করুন। অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না।


তিনি মঙ্গলবার বিকেলে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।


জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারী মো.শাহজাহান আলী ও জেলা সেক্রেটারী জয়নাল আবেদীনের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনি নিজে অবগত আছেন। আপনাকে প্রতিনিয়ত আদালতে টানা-হেচড়া করা হয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্ট আদালতে বসিয়ে রাখা হয়েছে, ৫ তলা পর্যন্ত সিঁড়ি বেয়ে উঠতে বাধ্য করা হয়েছে। সেই হাসিনার প্রতিহিংসার বিচারে এটিএম আজহারুল ইসলামকে এখনো বন্দী থাকতে হবে কেন? আজকে শুধু সিলেট নয়, সারাদেশে আজহারের অনুসারীরা গর্জে উঠেছে। অবিলম্বে থাকতে মুক্তি না দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আর এ দায় আপনাকেই নিতে হবে।


তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার জামায়াতকে নেতৃত্ব শুন্য করতে নতুন আইন করে অবৈধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এই আইন দেশ-বিদেশে কোথাও বৈধতা পায়নি। সেই ট্রাইব্যুনালের বিচারে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ, সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাশেম আলী, আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এবং কারাগারে হত্যা করেছে। পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর সেই অবৈধ ট্রাইব্যুনালের কোন রায় এদেশে কার্যকর থাকতে পারে না। অবৈধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত বিচারপতিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।


তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবে গণহত্যার বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। আজহারের বিচারের সময় স্বাক্ষী বলেছেন তিনি ৬ মাইল দুর থেকে নাকি আসামীকে খুন করতে দেখেছেন। অথচ বাস্তবে তিনি নিজের সামনের সামান্য দুরত্ব ঠিকমতো দেখতে পারেন না। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দেলু শিকদার বানিয়ে প্রহসনের রায়ে সাজা দিয়ে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে।


সমাবেশ শেষে রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে সমাপ্ত হয়। এতে সিলেট মহানগর ও জেলার আওতাধীন উপজেলা পৌর থানা ও ওয়ার্ড শাখার নেতাকর্মীরা।


এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান ও হাফিজ মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, মহানগর সহকারী সেক্রেটারী জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, জেলা সহকারী সেক্রেটারী নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাসুক আহমদ, সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ প্রমুখ।


সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ মাওলানা মশাহিদ আহমদ।


সিলেট প্রতিদিন / আরজে


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি