দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো গেলো কয়েক দিন ধরে সুনামগঞ্জেও চলছে তীব্র শীতের প্রকোপ। শীতের দাপটে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। শীতের তীব্রতা থাকায় শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। আয় রোজগারেও ভাটা পড়েছে তাদের। তাদের জন্য এ সময়ের শীত একটি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দিনমজুর মুখলিছ মিয়া বললেন, আগের মতো এখন আর কাজ নাই। কাজের আশায় আমরা কালিবাড়ির সামনের রাস্তায় এসে বসে থাকি। এখন কয়েক দিন ধরে বেশী শীতের কারণে কেউ কাজে নেয় না। আমবাড়ি থেকে কালিবাড়ি পর্যন্ত প্রতিদিন আসা-যাওয়ায় ভাড়া লাগে ৬০টাকা। কিন্তু আজকে তিন দিন ধরে আইসা ঘুরে যাইতেছি কোন কাজ পাই না। আজও বেলা অনেক হয়ে গেছে, আজকেও মনে হয় কাজ পাইতাম না।
শহরে ঠেলাগাড়ি করে কলা বিক্রয় করেন মঈনপুর গ্রামের লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, সকাল বেলা খুবই কম ক্রেতা মিলে। ঠান্ডার মধ্যে এমনিতেও কম কাস্টমার হয়। গতকাল ৪হাজার টাকার কলা আনছি, ২হাজার টাকারও বিক্রি করতে পারি নাই।
হালুয়ারঘাটের রিক্সাচালক চুটুল মিয়া বলেন, সকাল বেলা কুয়াশার কারণে যাত্রী পাওয়া যায় না। সকাল ৮ টার সময় বের হয়ে এখন বেলা ১০ টার উপরে বাজে মাত্র কয়েকটা ১০টাকা করে টিপ দিছি। ৩৫০টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে এখন কয়দিন যাবৎ দুই আড়াইশো টাকা করে পাই, আগে চার পাঁচশত টাকা পাওয়া যাইতো। সংসারে মা-বাবা, বউ-বাচ্চাসহ মানুষ ৮ জন এই দুই আড়াইশো টাকা দিয়ে কি চলে?
মামুন বাসের সুপারভাইজার শাহজান মিয়া বললেন, কুয়াশা শুধু সুনামগঞ্জেই না ঢাকার দিকেও এমনই। বাসের এক হাত সামনেই কোন কিছু দেখা যায় না। কোথাও কোথাও বাস থামিয়ে রাখতে হয়। স্বাভাবিকের তুলনায় এখন দু'ঘন্টা বেশি সময় লাগে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ আসতে।
পলাশের মোটর সাইকেল চালক মামুন আহমদ বললেন, কয়েকদিন যাবৎ অতিরিক্ত ঠান্ডা ও কুয়াশা পড়তেছে এই ঠান্ডার মধ্যে মটর সাইকেল চালানোও অনেকটা কষ্টসাধ্য, তার মধ্যে আবার পেসেঞ্জারও মিলে না। বয়স্ক যাত্রীরা এই ঠান্ডায় সবাই সিএনজি দিয়েই চলে যায়। অল্প কিছু যাত্রী আছে যারা মোটরসাইকেলে যায়। এই কদিন যাবৎ রুজি অনেক টাই কম।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বললেন, আগামীকাল দেশের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে এর পরদিন থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ অবস্থা চলতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে এরপর তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।