রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুন (৩৫) নামে ছাত্রদলের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ছাত্রদল নেতা মিথুনকে ছাড়াতে নিউ মার্কেট থানা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তার সমর্থকরা। এতে নিউ মার্কেট জোনের এসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভোরে ছাত্রদল নেতা মিথুনকে গ্রেফতার করে থানায় প্রবেশের সময় বাধা দেয় তার সমর্থকরা। এ সময় মিথুনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। একপর্যায়ে মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়িটি থানার ভেতরে নেওয়া সময় ছাত্রদল-যুবদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) তারিক লতিফসহ পাঁচ জন পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন।
পরবর্তী সময়ে এই হামলায় জড়িত ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতরা হলো, বশির ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ হাসান (২১), মোহাম্মদ ইমন (২৫), মাসুম মাহমুদ (৩২), মোহাম্মদ আলামিন (৩০) ও আকবর আলী।
এ বিষয়ে নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসিন উদ্দিন আতিক বলেন, মিথুনকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিতে তার সমর্থকরা চেষ্টা করেছিল, তবে পারেনি। এই ঘটনায় পৃথক একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে মাল্টিপ্ল্যান দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘ইমন গ্রুপ’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নিউ মার্কেট থানায় মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় রিমান্ডে নেওয়া এক আসামি স্বীকারোক্তি দিয়েছে, তাকে ঘটনাস্থলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল ছাত্রদল নেতা মিথুন। ইমন গ্রুপের মূলহোতা সানজিদুল হাসান ইমনের ধানমন্ডি এলাকার চাঁদা তোলার কাজ করে মিথুন। পরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। পরে ভোর সকালে তাকে থানার প্রবেশকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মিথুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউ মার্কেট থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশকালে মিথুনের সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে। এসময় তার সমর্থকরা লাঠি, লোহার রড, চাপাতি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে নিউ মার্কেট জোনের এসি তারিক লতিফ, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরব আলী, এসআই ফিরোজ আহমেদ, এসআই খন্দকার মেসবাহসহ চার থেকে পাঁচ জন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কার নির্দেশে থানা পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে, জানতে চাইলে ওসি মোহসিন উদ্দিন আতিক বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার কর্মকর্তা তদন্ত করে বের করবেন কার নির্দেশে এই হামলা হয়েছে।
বাংলা ট্রিবিউন