রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

লক্ষীপুর চা বাগানের ভূমি উদ্ধার ও চা শ্রমিকদের পূর্নবাসনের দাবি

  • প্রকাশের সময় : ৩০/১১/২০২৪ ০৮:৪২:২৯
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের ছবি: সিলেট প্রতিদিন
Share
25

কুলাউড়ার উপজেলার লক্ষীপুর চা বাগানের ভূমি দখলকারীদের কবল থেকে উদ্ধার ও চা শ্রমিকদের পূর্নবাসনের দাবী জানিয়েছেন বাগানের সাবেক চা শ্রমিক ও শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য।


সম্প্রতি বিলুপ্তপ্রায় চা বাগানের মুসলমান, খিষ্ট্রান,হিন্দু ধর্মাবলম্বির শতাধিক চা শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করে প্রতিকার চেয়েছেন।

     

আবেদেন সূত্রে জানা যায়, লক্ষীপুর চা বাগানের জায়গা ৪ ও ৫ নং খতিয়ানভুক্ত জমি। প্রায় ৯৫ একর আয়তন বিশিষ্ট চা বাগানের মালিক ছিলেন পৃথিমপাশার জমিদারগন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তের পর চা বাগানটি ৪ নং খতিয়ানভুক্ত এবং লক্ষীপুর টি গার্ডেন নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। মূলত জেলা প্রশাসক চা বাগানের মালিক হন। কিন্তু ৯৫ একরের চা বাগানটির মধ্যে কমপক্ষে ৪০ একর চাবাগানের জায়গা স্থানীয় কতিপয় ভূমিখেকোচক্র জাল দলিল সৃষ্টি করে সর্বশেষ ভূমি জরিফে তাদের নামে রেকর্ড করে ফেলে। ফলে চা বাগানের বাংলো,কোয়ার্টার, কুলি বস্তি, রাস্তা ইত্যাদি রেকর্ডে থাকলেও কয়েকজন ব্যক্তির দখলে রয়েছে বাগানের ৪০ একর জায়গা। বাকি জায়গায় এখনও কোন ঘরবাড়ি প্রতিষ্ঠিত না হলেও কতিপয় ভূমিখেকোচক্র বাগানের খালি পতিত জায়গা গুলিও তাদের নিয়ন্ত্রনে রেখেছে। অথচ বাগান পরিচালনায় যারা অতীতে দায়িত্বরত ছিলেন তাদের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ২৪ শতাংশ জায়গা।


বর্তমানে শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য বাগানের বিলুপ্তপ্রায় চা বাগানের কোয়ার্টারে বসবাস করলেও বাগানের রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাগানের সাবেক স্টাফ আমজদ আলীর নানতি রেহানা বেগম।


তিনি জানান, বাগানের জায়গা জবরদখলকারী আকুল মিয়া ও নিরঞ্জন কালোয়ার রাস্তা ব্যবহার করতে হলে মোটা অংকের টাকা দাবি করছেন। টাকা না দেওয়ায় আকুল মিয়া ও নিরঞ্জন কালোয়ার নানা টালবাহানা করে রেহানা বেগমসহ ১৬ টি পরিবারের নারী-পুরুষ,শিশু, এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ও হিন্দু ধর্মের শতাধিক নারী পুরুষকে বাগানের জায়গা থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছেন।


এব্যাপারে লক্ষীপুর চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্য রেহানা বেগম, চিনু মিয়া,রাবিয়া বেগম, শওকত মিয়া, রজনী কেচুয়া, জষ্টিনা চমগ, এন্ডভেন্ডেল, মমতা বেগম, রহিমা বেগম, প্রদীপ রুরাম জানান, এস এ খতিয়ান ৪ ও ৫,জেএলনং ১০২, অংশ ১, মালিকের নাম বিশেষ আবাদকারী মহাল লক্ষীপুর টি গার্ডেন, এসএ দাগং ১, ২০,২১,২২,২৩,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮,২৯,৩০, জমির শ্রেণী চা লায়েক, কুলিবস্তি, রাস্তা, পতিত, চারা, ডোবা রকম  প্রায় ৯৫ একর চা বাগানের জমিতে তাদের পূর্বপূরুষ আমজাদ আলী স্টাফ ছিলেন এবং তার স্ত্রী বাগানের শ্রমিক ছিলেন। আমজদ আলীসহ আমাদের বাবা, চাচারা এই বাগানে জম্মগ্রহন করে শ্রমিকের কাজ করেছেন। এই চা বাগান একটি প্রতিষ্ঠিত চা বাগান ছিল। নব্বইর দশকে কালিটি চা বাগানের সুরুলু কালোয়ার, নিরঞ্জন কালোয়ার, আকুল মিয়া গংরা জাল দলিল সৃষ্টি করে চা বাগানের জমি দখল করে এবং পূর্বের রোপিত চা গাছ কর্তন করে আবাদ করেছেন। বাগানের সাবেক এসএ দাগ নং ২৪ এর  ১০শতক এই রাস্তা দিযে আমরা যাতায়াত করে আসছি। কিন্তু নিরঞ্জন কালোয়ার ও আকুল মিয়া গংরা আমাদের রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাধা প্রদান করে। এলাকাবাসী চাবাগানের জায়গা উদ্বার করে এবং বাগানের জায়গা জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।


এব্যাপারে নিরঞ্জন কালোয়ার জানান, তার পিতা সুরুলু কালোয়ার জমিগুলি ক্রয়সুত্রে মালিক। চলতি সেটেলমেন্ট জরিফে তাদের নামে রেকর্ডভুক্তও আছে। জাল দলিল সৃষ্টি করে বাগানের জায়গা দখলের অভিযোগটি মিথ্যা। আমরা বৈধ মালিক।


অপরদিকে আকুল মিয়া বলেন, আবেদনকারীদের সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। আমি আমার বৈধ সম্পত্তিতে বসবাস করছি।


এব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ইছরাইল হোসেন জানান, এবিষয়ে আবেদনটি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 


সিলেট প্রতিদিন / এমএ


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি