বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন

তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ সিমেবি ভিসি এনায়েত হোসেন

  • প্রকাশের সময় : ০৭/১১/২০২৪ ০৩:৪১:৫২
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের
Share
43

বেশ কয়েকদিন থেকে ‘লাপাত্তা’ থাকার পর কার্যালয়ে ফিরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোষানলে পড়লেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিমেবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।


বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) নগরীর চৌহাট্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।


খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ভিসি ১৫ দিনের মধ্যে দাবি দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেন।


আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিয়োগ বাণিজ্যে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে অপসারণ করা হয়। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর কর্তৃক ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন তিনি।


বিভিন্নভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এমনকি তিনি কারও সঙ্গে দেখাও করতেন না। এমন পরিস্থিতিতে বেতন-ভাতা ও দাপ্তরিক কাজ আটকে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় সিমেবিতে।


কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, পট পরিবর্তনের পর ভিসি লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অজানা অবস্থান থেকেও তিনি গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হিসেবে মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ডা. নাজমুল ইসলামকে নিয়োগ দেন।


সূত্র জানায়, ডিন হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিএনপি নেতা ডা. নাজমুল ইসলামের আশ্বাসে ভিসি অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে আসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে চাকরিতে নিয়োগকৃত যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ নিজের কার্যালয়ে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যাচ্ছেন, এমন খবর চাউর হয়। সিমেবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত ভিবি কার্যালয়ে যান ও তাকে অবরুদ্ধ করেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক বলতে কেউ ছিলেন না। ভিসি, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ তিনজনই লাপাত্তা হয়ে যান। বৃহস্পতিবার যুবলীগ-ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী নিয়ে ভিসি ক্যাম্পাসে আসার খবর পেয়ে সবাই অবস্থান নিয়েছি আমরা।


এ বিষয়ে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে আপোষ করবো না। তারা আমাদের কাছে আশ্রয় পাবে না। আর উনাকে (ভিসি) টেক কেয়ার করা কিংবা সহযোগিতার প্রশ্নই আসে না।


স্বৈরাচারের দোসর বললেও ভিসির সইয়ে ডিন পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০তম সিন্ডিকেটের সভায় আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি সই করেছেন মাত্র। দেশের বৃহত্তম স্বার্থে এটা এমন কিছু না। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন।


তাছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্যাডে নিয়োগ কার্যকর হলেও এ নাম তিনি সমর্থন করেন না জানিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের নামে ফিরে যাব। এই নাম মানি না, মানবো না।


পরে জানা যায়, ভিসি ১৫ দিনের মধ্যে দাবি দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর তার অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান হয়। বিষয়টি নিয়ে ভিসি ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।


সিলেট প্রতিদিন / এমএনআই


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি