বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ অপরাহ্ন

ত্রিমুখী প্রেমের অবসান টানলেন শাহিন

  • প্রকাশের সময় : ০৩/১১/২০২৪ ০৬:৩৫:৪৯
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের ছবি: সংগৃহীত
Share
47

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে শাহীন নামের এক যুবককে বিয়ে করতে অনশনে বসেন একসঙ্গে দুই তরুণী। অবশেষে সমাধান এলো ত্রিমুখী প্রেমের। অনশনে বসা সাদিয়া খাতুন স্বেচ্ছায় ওই বাড়ি থেকে চলে গেছেন। এতে রুনাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্য দিয়ে এই ত্রিমুখী প্রেমের অবসান টানলেন শাহিন।


রোববার (৩ নভেম্বর) রাতে উভয় পরিবারের সমর্থনে গাগান্ন গ্রামে শাহিনের বাড়িতে বিয়ে হবে শাহিন ও রুনার।


জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া খাতুন স্বেচ্ছায় অনশন ভেঙে চলে যাওয়ার পর সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের গাগান্না গ্রামের ইকরামুল হকের ছেলে শাহীন ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশাটিয়া ইউনিয়নের ঘোড়াগাছা গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে রুনার বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শাহিন ও রুনার পরিবার।


এর আগে শনিবার বিকেলে রুনা খাতুন বিয়ের দাবিতে শাহিনের বাড়িতে অবস্থান নেন। রুনা খাতুনের আসার খবরে সাদিয়া খাতুনও বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে আসেন। এক যুবকের বাড়িতে দুই তরুণীর অবস্থানের খবর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। কাকে রেখে কাকে বিয়ে করবেন এ নিয়ে দ্বিধায় পড়েন শাহিন। পরে সাদিয়ার পরিবার শাহিন সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পর স্বেচ্ছায় চলে যায়।


শাহিনের প্রতিবেশী জামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে রুনার সঙ্গে শাহিনের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। শাহীন ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রুনাকে পরিবার থেকে তার অমতে বিয়ে দিতে গেলে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে শাহীনের বাড়িতে উঠেন। অন্যদিকে দুই মাস আগে শাহিন সাদিয়া নামের আরেক মেয়েকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে তাদের বাড়িতে দেখতে যান। সেখান থেকে সাদিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে শাহীনের। প্রেমিকের বিয়ের কথা শুনার পর সাদিয়াও তার বাড়িতে আসে বিয়ের দাবিতে। এমন ঘটনায় শাহীন ও তার পরিবারের সবাই হতভম্ব হয়ে পড়ে। পরে গ্রামের সবাই মিলে সাদিয়া ও রুনার সঙ্গে কথা বলি। সাদিয়া নামের ওই মেয়েটি শাহিনদের সম্পর্কে জানার পর চলে যায়। পরে শাহিন ও রুনার পরিবারের সমর্থনে দুজনের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। তবে দুই মেয়ে একসঙ্গে একই ব্যক্তিকে বিয়ের দাবিতে অনশন, এটাই প্রথম দেখলাম।


আরেক প্রতিবেশী আফাজ উদ্দীন বলেন, ইকরামুলের ছেলে শাহিনকে বিয়ের দাবিতে দুটি মেয়ে এসেছিল। তাদেরকে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে বলা হলে তারা দুজন একইসঙ্গে শাহিনকে বিয়ে করতে রাজি হয় এবং শাহিনও দুজনকে একসঙ্গে বিয়ে করতে চায়। পরে দুজনকে আলাদাভাবে জেনেবুঝে সিদ্ধান্ত দিতে বলা হলে সাদিয়া তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে অনশন প্রত্যাহার করে স্বেচ্ছায় চলে যায়। পরে রুনার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দুই পরিবারের লোকজন ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ও সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে দিতে রাজি হয়। তবে এখনো পর্যন্ত তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়নি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহিন বলেন, এক বছর আগে রুনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাঝে ঝামেলা হওয়ায় তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত দুই মাস হলো সাদিয়াকে বিয়ের উদ্দেশ্যে ওদের বাড়িতে দেখতে যাই। সেখান থেকেই তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে তার সঙ্গে মাঝে ঝামেলা হওয়ায় গত ১৮ দিন ধরে কোনো যোগাযোগ ছিল না। হঠাৎ করে শনিবার বিকেলে রুনা বাড়িতে চলে আসে এবং বলে তার বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। সে আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। এরপর রাত ৮টার দিকে রুনার আসার কথা শুনে সাদিয়াও বাড়িতে চলে আসে। কাকে রেখে কাকে বিয়ে করব এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগী। পরে সিদ্ধান্ত নিই দুজনকেই বিয়ে করব। এর মধ্যে হঠাৎ করে সাদিয়া তার সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে। এখন রুনাকেই বিয়ে করব।


রুনার মামা লিটন বলেন, গতকাল রাত থেকেই শাহিন বিয়ে করবে বলে কালক্ষেপণ করছে। এখনো পর্যন্ত বিয়ে (বিকেল সাড়ে ৫টা) হয়নি। তবে আজকেই রুনা ও শাহিনের বিয়ে হবে। আমরা সামাজিকভাবেই তাদের দুজনের বিয়ে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। তারপরও শাহিনকে নিয়ে আমাদের সন্দেহ, সে হয়ত রুনার সঙ্গে প্রতারণা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস নেই।


হলিধানী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার বলেন, শনিবার রাতে যে দুটি মেয়ে শাহিনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে এসেছিল তাদের মধ্যে সদিয়ার বিয়ের বয়স না হওয়ায় সে চলে গেছে। পরে রুনার সঙ্গে বিয়ের কথা রয়েছে। হয়ত আজ রাতের মধ্যেই বিয়ে হবে।


সিলেট প্রতিদিন / এমএ


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি