সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক ধর্ষণের অভিযোগসহ ৫ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা।
রোববার (৩ নভেম্বর) দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ইসমাঈলের ছেলে কারিম উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া (৭১) ও একই গ্রামের ইসমাইল আলীর মধ্যে জমিজমা সংক্রান্তে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিলো। মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া ক্ষমতার প্রভাবে প্রায়ই জোরপূর্বক জমি দখল এবং জমিতে লাগানো বাঁশ ও গাছ কেটে নেওয়ার চেষ্টা করতেন। বাঁধা দিলেই তিনি থানায় কল দিয়ে পুলিশ এনে হয়রানি করতেন। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে রফিক মিয়া কর্তৃক ইসমাঈলের জায়গা হতে বাঁশ কেটে নেওয়ার বিষয়কে কেন্দ্রকরে উভয় পক্ষের মধ্যে মুখামুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর একটি মিথ্যা ধর্ষণ কাহিনী সাজিয়ে ইসমাঈল আলীর ছেলে শামিম মিয়া (তৎকালীন বয়স ১৫), মাজেদ আলীর ছেলে হায়দর আলী (১৫), আ.করিমের ছেলে কবির হোসেনকে আসামী করে দোয়ারাবাজার থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন রফিক মিয়া। এতে দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকার পর বয়স কম থাকার সুবাধে আদালত তাদের জামিন দেয়। এরপর প্রতিশোধের শপথে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া। ক্ষমতার দাপটে সামাজিকভাবে প্রায়ই কোন না কোন বিষয় নিয়ে ইসমাঈল আলীর পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে ঝগড়া ফাঁসাদে লিপ্ত রাখে।
২০২১ সালের ১৮ মার্চ ইসমাঈল আলীর জমি হতে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক মিয়া জোরপূর্বক বাঁশ কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আবারও দু-পক্ষের মুখামুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই বছরের ১ এপ্রিল ইসমাঈল মিয়া (৪২), ইসমাঈল মিয়ার পুত্র শামিম মিয়া (২০), মাজেদ আলীর পুত্র হায়দর আলী (২২),করিম মিয়ার পুত্র কবির আহমদ (২০). মৃত আক্কেল আলীর পুত্র নুর ইসলাম (৫০), নুর ইসলামের পুত্র মরম আলী (১৯) ও রমজান আলী (২০).মৃত ইব্রাহিম আলীর পুত্র বাদশা মিয়াকে (৪৫) আসামী করে দোয়ারাবাজার থানায়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এর পর চলতি বছরের ৬ অক্টোবর জমিজমা সংক্রান্তে সুনামগঞ্জ আদালতে ইসমাঈল আলী ও তার ভাই নুর ইসলাম, মৃত মজিবুর রহমানের পুত্র ফাহমিদা খাতুন, মৃত ইব্রাহিম আলী'র স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও পুত্র বাদশা মিয়া, বাদশা মিয়ার পুত্র মানিক মিয়া, মৃত দ্বারীকনাথ ভূইয়ার স্ত্রী সোরবালা কপালী,গুরু দয়াল দাসের স্ত্রী আমোদিনী দাসীকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ৬ অক্টোবর দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এমন একটি অভিযোগ দেখিয়ে প্রতিপক্ষের ১৩ জনকে আসামী করে ৮ অক্টোবর সুনামগঞ্জ আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা রফিক। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর রফিক মিয়াকে উপরোল্লিখিত আসামীরা বসতঘরে থাকতে দিচ্ছে না এমন মিথ্যা অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্টের পাশাপাশি অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিক ভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আমরা শারীরিক, মানসিক, আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। মিথ্যা মামলা ও হয়রানি থেকে রক্ষায় আমরা প্রশাসনের সৃদৃষ্টি কামনা করছি।
সংবাদ সন্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো.আব্দুল জলিল,মো.মতিউর রহমান,মানিক মিয়া, ইসমাইল হোসেন, নুরুল ইসলাম, মুবারক হোসেন, হামিদ মিয়া,রমজান আলী, সাহিদ মিয়া,সুহাগ মিয়া,কাওছার আলম, হারন মিয়া, তোফাজ্জল হোসাইন,মোছা.সেলিনা খাতুন,মোছা.রুসেনা খাতুন প্রমুখ।