জৈন্তাপুরে ৪ মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্মকর্তা মইনুল হোসেন আয়ানী (৫০) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় সিলেট জেলা সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে লাশটি উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, গত ১৩ জুন রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে জৈন্তাপুর উপজেলার ৬ নম্বর চিকনাগুলের উমনপুরের (গ্যাস ফিল্ড ৮ নম্বর কুপ) সামনে মইনুল হোসেন আয়ানী মারা যান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই আয়ানির লাশ পরিবারের সদস্যরা দাফন করে।
ঘটনার পরে নিহতের ভাই নজমুল হোসাইন (এমদাদ) বাদী হয়ে ৯ জনের নামে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে (৩অক্টোবর) জৈন্তাপুর মডেল থানা মামলাটি আমলে নিয়ে রেকর্ডভুক্ত করেছে।
সড়ক দুর্ঘটনা নয় একটি শালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিকল্পিত ভাবে মইনুল হোসেন আয়ানিকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে মামলা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
রোববার দুপুরে জেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে জৈন্তাপুর উপজেলাধীন ৬ নং চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলনের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি শালিশি বিচারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন আয়ানী। তিনি জৈন্তাপুরের চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামের মৃত ঈসা মেম্বারের ছেলে। গত জুন মাসে আজাদ খানের বাড়িতে লেচু চুরির ঘটনা ঘটে। লেচু চুরির সালিশে আয়ানি জোরালো ভূমিকা রাখেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামী উমর আলী, সোহেল আহমদ ও ইউসুফ আলী। এই পরিকল্পনায় সহযোগিতা করে তিন আসামীর পরিবার। ১৩ জুন রাতে রাস্তায় ডিআই পিকআপ দিয়ে আয়ানির মোটরসাইকেল গতিরোধ করে লোহার পাইপ/রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামীরা সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর খবর পেয়ে আয়ানীর পরিবার, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ডিআই পিকআপ গাড়িটি ওই রাতেই হরিপুর এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।