কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনে কারসাজি হয়েছে। এমন অভিযোগ তুলেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৭ জন ইউপি সদস্য। দুইজন ইউপি সদস্য ভোট দিতে গিয়ে একই পদে ২ প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় ব্যালেট পেপার বাতিল দেখিয়ে তাদেরকে পুনরায় নতুন ব্যালেট পেপার দিয়ে ভোট নেওয়া হয়। বিষয়টি অভিযোগকারীরা বিধি সম্মত হয়নি মর্মে দাবি করে অচিরেই প্যানেল নির্বাচন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২৯ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আর এইসবের কলকাঠি নেড়েছেন স্বয়ং রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহাগ। এমন দাবি অভিযোগকারীদের।
স্মারকলিপি থেকে জানা যায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১২ জন সদস্যের উপস্থিতিতে একসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার আলোচ্যসূচিতে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করার বিষয়টি উল্লেখ ছিলো না। পরিষদ গঠনের পর থেকে দাবিটি উপেক্ষিত ছিলো। কিন্ত ওইদিন উপস্থিত সকলের মতামত সাপেক্ষে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। তাৎক্ষনিক প্যানেল ১, ২ ও ৩ এর জন্য প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয় এবং তড়িগড়ি করে ব্যালেট পেপার ছাপিয়ে সন্ধ্যার পর ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। তখন প্যানেল ১ এর প্রার্থী লুৎফুর রহমান শারীরিক অসুস্থতার কারনে একদিন সময় চান। চেয়ারম্যান তার এই দাবিটি গ্রহণ করেননি। সন্ধ্যায় ভোট শুরু হলে সংরক্ষিত নারী সদস্য সুলতানা বেগম ও ফয়জুন নেছা ভোট প্রদান শেষে তারা প্যানেল ১ এর ব্যালেট পেপারে একই পদের দুই প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন বিষয়টি চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহাগ ও প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল মুহিত চৌধুরী রিপনকে অবহিত করেন। এসময় তাদেরকে পুনরায় ব্যালেট পেপার দেওয়া হয় এবং তারা ভোট প্রদান করেন।
ইউপি সদস্য লুৎফুর রহমান বলেন অসুস্থতার জন্য সময় চেয়েছিলাম, আমাকে একদিনেরও সময় দেওয়া হয়নি। আড়াই বছরে অনেকবার প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনের দাবি তুললেও চেয়ারম্যান কর্ণপাত করেন নি। অথচ এজেন্ডায় না থাকা স্বত্বেও তাড়াহুড়ো করে ওইদিনই ভোট নেওয়া হয়েছে। আমি ভোটটাও দিতে পারিনি। ইউপি সদস্য আব্দুল মোক্তাদির মনু বলেন, পুনরায় ব্যালেট দেওয়ার কোন বিধান নাই। চেয়ারম্যান ও প্রিজাইডিং অফিসার আঁতাত করে অনৈতিকভাবে কাজটি করেছেন। আমরা এই নির্বাচন বাতিলের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল মুহিত চৌধুরী রিপনকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহাগ পুনরায় ব্যালেট পেপার দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ব্যালেট পেপার দিয়েছি। একবার ভোট দিয়ে দিলে পুনরায় ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারকে ব্যালেট পেপার দেওয়ার কোন বিধান আছে কি? জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেন নি।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।