বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন

সিলেটে নিরিহ ও প্রবাসীদের মামলার আসামি করায় সমালোচনা

  • প্রকাশের সময় : ০৪/০৯/২০২৪ ১০:১৫:১৬
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের
Share
58

সিলেটের গোয়াইনঘাটের মনরতলবাজারের রাস্তায় গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর অনুষ্টিত আনন্দ মিছিলে হামলা গুলিবর্ষণে সুমন মিয়া (২০) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অনেক নিরিহ ব্যক্তি ও প্রবাসীদের আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে এবং সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।


মামলার বাদী গোয়াইনঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নিহত সুমনের পিতা আব্দুন নূর বিলাল।


মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সাংসদ ইমরান আহমদ, সাবেক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ পুলিশ বিজিবি সদস্যদের যেমন আসামি করা হয়েছে, তেমনি আসামি করা হয়েছে সাংবাদিক, নিরিহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং অনেক প্রবাসীকেও। মোট ৬৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে  আরও প্রায় শ’দেড়শ’ জনকে।


গত ২৭ আগস্ট সিলেটের  জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ফেনাইকোনা গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে আব্দুন নূর বিলাল।


এই মামলার আসামিদের নাম দেখে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে তুমুল সমালোচনা। কারণ, মামলায় অনেক দিন থেকে প্রবাসে থাকা ব্যক্তিদেরও আসামী করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে অনেক নিরিহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিকেও।


যেমন, ৩২নং আসামি সিলেট মহানগর পুলিশের এয়ারপের্ট থানার বাজারতল এলাকার মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে আকরাম উদ্দিন (৬০)। এলাকায় তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক হিসাবে পরিচিত। তিনি এবং তার ছেলে ফয়ছল আহমদকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।


তাদের দাবি, একজন উকিল পূর্ব শত্রুতার জেরে বাদীকে প্রভাবিত করে তাদেরকে মামলার আসামি করেছেন। শুধু তারাই নয়, একই মামলায় আসামি করা হয়েছে দেড় বছর ধরে কানাডায় অবস্থান করা এয়ারপোর্ট থানার ছালিয়া গ্রামের মৃত আনিছ মিয়ার ছেলে ইকলাল আহমদ, সাংবাদিক দেবাশিষ দেবুসহ আরও অনেক নিরিহ ব্যক্তিকে।


বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ করছেন। তাদের একজন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল।


সম্প্রতি তার ফেসবুক টাইমলাইনে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, সাংবাদিক নিরিহ জনতার নামে গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুন নুর বিলালের মামলা দায়ের। বদনাম হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপির। দলীয় নেতাকর্মীদের এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান।


এদিকে ভুক্তভোগী, এই মামলার আসামি ফয়ছল আহমদ সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে বিএনপি নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আহাজারি করেছেন। তিনি ও তার পিতা পল্লী চিকিৎসক আকরাম উদ্দিনের যে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই, তবু তারা প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন বা হচ্ছেন- এই তার বক্তব্যের সারমর্ম।


বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়ে গত ২/৩ দিন ধরে একাধিকবার কল দিলেও বাদী আব্দুন নূরের মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। আর তার মামলার আইনজীবী হিসাবে মামলা দায়েরের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদ আলমকে কল দিলে তিনি প্রতিবেদক কে জানান, তিনি এ মামলার বাদীর আইনজীবী নন।


তবে তার প্ররোচনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে নিরিহদের আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উকিলো লগে সাংবাদিকতা দেখাইওনাতে।


এরপর অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারারে জিকাইও (ডাক্তার আক্রাম ও তার ছেলে ফয়ছল) একজন উকিলরে খুনর মামলাসহ ১৫/১৬টা মামলার আসামি দিছিল কিলা?


তাহলে প্রতিশোধ নিতেই তাদের আসামি করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হুনো হুনো শেষ কথা। বাদীরে জিকাও কেনে কারে আসামি করছে।


এদিকে গোয়াইনঘাট থানার এফআইআর-এ, দুই আসামির নাম বাদ দেয়া হয়েছে বলে দেখা গেছে।  


সিলেট প্রতিদিন / ইকে


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি