বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে কৌশল অবলম্বন করেছিলেন অভিনয় শিল্পীদের একটি দল। তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগ মতাদর্শী। ‘আলো আসবেই’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার কথাবার্তা সেরে নিতেন তারা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দমনে ছক কষায় মেতেছিলেন ওই গ্রুপের সদস্যরা।
তবে মঙ্গলবার সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়। এতে ওই গ্রুপের অভিনয়শিল্পীদের ওপর ফুঁসে ওঠে সাধারণ জনতা।
আলো আসবেই গ্রুপে বর্তমানের ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানকে নিয়ে অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্যের একটি মন্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, সাদিয়া আয়মানকে ‘তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী’ বলে মন্তব্য করেছেন মিলন। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি অভিনেত্রী সাদিয়া। গ্রুপের স্ক্রিনশট ফাঁস হতেই মিলনের মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন তিনি।
আন্দোলন চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিটিভি। তখন একদল অভিনয়শিল্পী শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা না বলে উল্টো বিটিভি প্রাঙ্গণে গিয়ে টেলিভিশনটির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আওয়াজ তোলেন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন তারা। বিটিভি প্রাঙ্গণে গিয়ে যারা কান্নায় ভেঙে পড়েন তাদের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। সাদিয়ার সেই প্রতিক্রিয়া ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে তুলে ধরেন মিলন ভট্টাচার্য। তখন গ্রুপের আরেক সদস্য অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস জানতে চান কে এই সাদিয়া? জবাবে মিলন ভট্টাচার্য বলেন, এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
সম্প্রতি মিলন ভট্টাচার্যের উদ্দেশে সাদিয়া ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, আপনাকে ধন্যবাদ মিলন ভট্টাচার্য দাদা, মানুষের মতো দেখতে, শিল্পী নামে শয়তান বেশধারীদের কাছে আমার মতো ‘এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে চিনিয়েছেন, যে ভুলকে ভুল বলতে জানে, সত্যকে সত্য বলতে জানে। গ্রুপের নাম দিয়েছেন ‘আলো আসবেই’, তা বেশ ভালো, তবে আপনারা জানেন আপনাদের নিজেদের জীবনে, মস্তিষ্কে সত্যিকারের আলোর যে ভীষণ প্রয়োজন?
সাদিয়া আয়মানের কাছে ক্ষমা চাইলেন ‘আলো আসবেই’ সদস্য মিলন
‘আলো আসবেই’ সিক্রেট গ্রুপ নিয়ে যা বললেন অভিনেতা বাবু
সাদিয়ার ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন অভিনেতা মিলন। ক্ষমা চেয়ে এই অভিনেতা লিখেছেন, আমি খুবই দুঃখিত। যদি সম্ভব হয়, ক্ষমা করে দিও। আমার এমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। আমি এভাবে বিষয়টা বোঝাতে চাইনি। এটা একটা কথার সিরিয়ালে আসছে। যাই হোক, আমি লজ্জিত এমন শব্দ ব্যবহারের জন্য।
মিলন আরও বলেন, তোমার বিরুদ্ধে আমি নই, বিশ্বাস করো। দুঃখিত, সে সময়ে দেশের অস্থির পরিস্থিতির জন্য। কী যে কথা বলেছি, সত্যিই বলছি—মাথা ঠিক ছিল না। বিশ্বাস করো, আমি চাই তুমি বিষয়টা বোঝো, তোমার বিরোধী নই আমি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও চিত্রনায়ক রিয়াজও। সেই তালিকায় ছিলেন—সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ অনেকে।