বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেছেন। সরকার প্রধানের পদত্যাগের পর বাংলাদেশের পুলিশবাহিনী সারা দেশে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের জনরোষের মুখে পড়ে। আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতির ফলে সারাদেশে পুলিশ সদস্যরা থানা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। পরে প্রথমে বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে থানার নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সারাদেশের সকল থানায় নিশ্চিন্দ্র নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশবাহিনী সংস্কারের দাবিতে ১১ দফা দাবিতে সারাদেশের পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করে। অবশেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে কর্মবিরতি পুলিশ সদস্যদের বৈঠকের পর তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।
বর্তমানে কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর আজ থেকে পুলিশ সদস্যরা থানায় ফিরতে শুরু করেছেন। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬টি থানা প্রায় ৬দিন বন্ধ থাকার পর পূনরায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। নিজ নিজ থানায় সাদা পোশাকে ফিরতে শুরু করেছেন পুলিশ সদস্যরা। এখনো প্রতিটি থানায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়।
এসএমপি'র সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানা, এয়ারপোর্ট থানা, জালালাবাদ থানা, শাহপরান (রঃ) থানা, দক্ষিণ সুরমা থানা ও মোগলাবাজার থানায় পুলিশ সদস্যরা নতুন স্বপ্ন নিয়ে থানায় দেশ ও জনগনের সেবায় নিয়োজিত থাকতে থানায় যোগ দিয়েছেন। প্রতিটি থানা ধুয়ে মুছে পরিষ্কারের পর শুরু হয়েছে সীমিত আকারে থানাগুলোর কার্যক্রম। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসএমপি'র বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। একপর্যায়ে থানা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ সদস্যরা। এরপর থেকে সারাদেশে বন্ধ হয়ে যায় থানার সার্বিক কার্যক্রম।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান (পিপিএম) সিলেট প্রতিদিনকে জানান, এসএমপি'র ৬টি থানায় পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন থেকে জনগণ থানায় উপস্থিত হয়ে যে কোন ধরনের সেবা নিতে পারবেন। পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি থানায় নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেছে। তিনি এসএমপি'র আইনশৃঙ্খলা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি বিনীত আহ্বান জানান।