সদ্যবিদায়ী জুন মাসে দেশে ২৫৪ কোটি ডলার (২.৫৪ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ২৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এটি ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরো সময়ে এসেছে প্রায় ২৪ বিলিয়ন (২৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত মাসে কোরবানি ঈদ থাকায় বেড়েছে দেশের প্রবাসী আয়। ঈদের সময়ে দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছে বছরের অন্য মাসের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন প্রবাসীরা। যার ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। এ নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, নানা উদ্যোগের ফলে বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়ছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের সবশেষ মাস জুনে ২৫৪ কোটি ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। এটি তিন বছরের (৩৫ মাস) মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স। এর আগে সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই মাসে আড়াই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। ওই মাসে এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। সে হিসাবে মে মাসের তুলনায় জুনে ২৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার বেশি এসেছে। আর গত বছরের একই মাসের তুলনায় বেশি এসেছে ৩৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের জুন মাসে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরো সময়ে এসেছে ২৩.৯২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরে এসেছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৩১ কোটি ডলার। অর্থবছরের হিসাবে সর্বোচ্চ ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
বেড়েছে রিজার্ভ: গত এক মাসে ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার এক টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় জুন মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ ও কয়েকটি সংস্থার পাশাপাশি কোরিয়া থেকে আসা ঋণ যোগ হয় গত ২৬শে জুন। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সের এই উল্লম্ফন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ২৭শে জুন শেষে গ্রস হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭.১৫ বিলিয়ন ডলারে। রিজার্ভ বেড়ে গ্রস হিসাবে অবশ্য আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২২ বিলিয়ন ডলার বলে জানান মুখপাত্র মেজবাউল হক। তার মানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিপিএম৬ পদ্ধতির হিসাবে আগের মতোই রিজার্ভের পরিমাণের পার্থক্য ৫.১৫ বিলিয়ন ডলারই থাকলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ২৬শে জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে ২৪.৬২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাবে তা ছিল ১৯.৪৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ করে না। শুধু আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থাকে জানিয়ে দেয়।