শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৫ অপরাহ্ন

সিলেটে দর্শনার্থী শিশুদের বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস

  • প্রকাশের সময় : ১১/০৪/২০২৪ ১০:১৬:০২
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের
Share
53

ঈদ মানে হাসি, ঈদ মানে খুশি। বিশেষ করে হাসি-খুশির দেখা যায় শিশুদেরকে। ঈদের নতুন পোশাকের খায়েস না মিটলে কান্না আর কান্না।শিশুদের সেই কান্না থামাতে বাবা-মায়ের কতশত আকুতি মিনতি।সেই ফাঁকে ঘুরতে যাওয়ার বায়না । শিশুদের এমন বায়না পূরণে বাবা-মায়ের চেষ্টা। তাই কেউ যান গাড়ি নিয়ে দূরদূরান্তে ঘুরতে আর কেউবা ছুটে আসেন পার্কে।


আনিশা জান্নাত (৬)। ঈদে তিনটি পোশাক কিনলেও বিকেল থেকে ঘুরতে যাওয়ার বায়ানা ধরে। কোনো ভাবেই যখন বোঝানো যাচ্ছিলোনা তখন বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে ঘুরতে আসেন মা শামীমা আক্তার। 


শামীমা জানান, মেয়ের বাবা প্রবাসী। একে একে তিনটি ড্রেস কিনে দেয়া হয়েছে।তবুও তার বায়নার শেষ নাই।এখন এটা তখন ওটা লাগবে বলে কান্না কাটি শুরু করে। বিকেল থেকে পার্কে আসবে বলে বায়না ধরে তাই নিয়ে এলাম।


মেয়ের এমন বায়নার কথা বলছিলেন মা শামীমা আক্তার সিলেট বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে। শিশু উদ্যানটি সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ে অবস্থান।


সিলেট নগরীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই শিশু উদ্যান। প্রতিদিন শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ ভিড় জমান এখানে। প্রায় দুই যুগ আগে নির্মিত এই শিশু উদ্যানটিতে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। দর্শনার্থীদের জন্য এখানে রয়েছে প্রায় ২২ টি রাইড।


উল্লেখযোগ্য রাইডের মধ্যে রয়েছে-বাম্পার কার,রোলার কোষ্টার ও লাইভ ম্যাজিক শো।এছাড়াও রয়েছে, নাগরদোলা, ময়ুর রাইড,ইলেক্ট্রিক ট্রেইন,এয়ার সাইকেল,বিভিন্ন রকমের স্লিপার, হর্স রাইড,ফ্লাওয়ার রাইড সহ নানা ধরনের রাইড।


সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১১এপ্রিল) বিকালে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভিড় বাড়তে দেখা যায়। বিকাল সাড়ে তিনটায় উদ্যানের সামনের গেইটে টিকিট কাউন্টারের সামনে ছিলো দীর্ঘ লাইন। প্রতিজনের জন্য ৩০টাকা দিয়ে একটি টিকিট সংগ্রহ করেন।


টিকিট সংগ্রহ করে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন রাইড করতে দেখা যায়। উদ্যানে ২২ টি রাইডের মধ্যে ২০ টি রাইডের টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা করে। আর রোলার কোষ্টার ও বাম্পার কার রাইড ৫০ টাকা করে। শিশু উদ্যানে ৮২ জন কর্মরত রয়েছেন।এর মধ্যে ৪২ জন স্থায়ীভাবে আর বাকিরা ঈদ ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।


প্রবেশ টিকিট বিক্রির কাউন্টারে টিকিট কিনতে আসা নগরের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ মখলিসুর রহমান রাসেল জানান,আমি আমার ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি।টিকিট কাউন্টারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে টিকিট করলাম।এখন শিশুপার্কের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের ঘুরে ঘুরে দেখাবো।


সিলেট নগরীর নবাব রোডের বাসিন্দা জহিরুল চৌধুরী বলেন, দুই বছরের ছেলে ইয়ামিন। ছেলে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। ঘুরে অনেক ভালো লাগছে।


এবিষয়ে শিশু উদ্যানের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্বে থাকা শাহনাজ চৌধুরী বলেন, এইটা গরীবের পার্ক নামে পরিচিত। প্রায় দুই যুগ থেকে আমরা শিশুদের সুস্থ বিনোদন দিয়ে যাচ্ছি।বিভিন্ন দিবসে এখানে অনেক লোকের সমাগম হয়।এই জায়গা অনেক নিরাপদ।আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন খুবই এক্টিভ।এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি।


তিনি আরও বলেন,বিজয় দিবস স্বাধীনতা দিবসে আমরা ফ্রি রাইডের ঘোষণা দেই।এ ছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত লোকদের জন্য আমরা যেকোন সময় প্রবেশ ও রাইড ফ্রি দিয়ে থাকি।প্রয়োজনে অনেক সময় আমরা তাদেরকে খাবারও দেই।পরিচালনা পর্ষদ থেকে সবসময়ই দর্শনার্থীদের প্রায়োরিটি দেওয়া হয়।আজ ঈদের দিন পাচ হাজারের অধিম লোকের সমাগম হয়েছে।আগামী দুই-তিন দিনে এই সংখ্যা সর্বোমোট ১০ হাজার ছাড়াবে।


সিলেট প্রতিদিন / টিবি


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি