মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন

নবীগঞ্জে ১০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড ৬০ গ্রাম

  • প্রকাশের সময় : ০১/০৪/২০২৪ ০৯:৩৯:৫২
এই শীতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের
Share
49

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে গেলো ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি। মাত্র ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে শহরসহ ৬০টি গ্রাম।


এই তাণ্ডব ভয় ধরিয়েছে মানুষের মনে। রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝড় শেষ হাওয়ায় শীতল হয়ে আসে প্রকৃতি।


এরপর ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এক একটি শিলা যেন বড় বড় পাথর। শিলাবৃষ্টিতে চলাচল করা অসংখ্য যানবাহনের গ্লাস ভেঙে পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।


কারও কারও বাসার টিনের চালা ফুটো ও জানালার কাঁচে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন খোলা জায়গায় ও রাস্তায় অবস্থান করা অনেকেই। এদিন রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে শেষ হয় শিলাবৃষ্টি।


শিলাবৃষ্টিতে শিলার আঘাতে মাথা ফেঁটেছে অনেকের। ভেঙে পড়েছে গাছ, ভেঙেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাঁচ। বাধাগ্রস্ত হয়েছে যান চলাচল। অনেকের বাড়ি ঘরের ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ছাদসহ ভেঙ্গে পড়েছে সাইনবোর্ড। শিলার আঘাতে অনেক পাখিকে মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়।


নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রচণ্ড শব্দে মনে হয়েছিল ঘরের টিন ছিদ্র হয়ে যাচ্ছে। ফরিদপুর গ্রামের আব্দুস ছোবহান বলেন, এ রকম বড় শিলাবৃষ্টি আগে কখনো দেখেননি তারা।


তাদের এলাকায় কাচা ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের বয়োজেষ্ঠ আব্দুস ছোবহান বলেন, জন্মের পর থেকে এতো বড় বড় শিলাবৃষ্টি পড়তে দেখিনি। শিলার আঘাতে বেশ কয়েকটি যানবাহনের গ্লাস ভেঙে যেতে দেখেছেন তিনি।


একেকটি শিলার ওজন ২০০ গ্রাম ছাড়িয়ে। আউশকান্দি বাজার এলাকার পান দোকানি আলম মিয়া বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ পেরিয়ে, কখনো এরকম বড় আকৃতির শিলাবৃষ্টি হয়েছে, জানা নেই।’ মুশাহিদ আলী বলেন, আমার দেখামতে, এ ধরনের বড় বড় শিলাবৃষ্টি আগে কখনো হয়নি।


এ রকম শিলাবৃষ্টি গ্রামাঞ্চলে হলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে মাত্র ১০ মিনিট শিলা বৃষ্টির পর হবিগঞ্জ জেলার সব উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে। ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে স্বাভাবিক যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয়েছেন, পড়েছেন ভোগান্তিতে।


উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও শিলাবৃষ্টিতে অসংখ্য যানবাহনের কাঁচ ভেঙেছে। মহাসড়কের মধ্যে শিলার আঘাতে গাড়ির কাঁচ ভেঙে একজন যাত্রী আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ।


রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো নবীগঞ্জ। বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের বরাত দিয়ে নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ লাইন ও খুঁটি সব লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে।


ফলে মেরামত কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরুপণ করা যায়নি।


সিলেট প্রতিদিন / স.ল


Local Ad Space
কমেন্ট বক্স
© All rights reserved © সিলেট প্রতিদিন ২৪
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি