ব্রিটেনে স্পাউস বা জীবনসঙ্গী আনার জন্য সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম আয়সীমার শর্ত পূরণ করার মতো আয় করতে পারেন না দেশটির অর্ধেক কর্মী।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন পর্যবেক্ষণ সমীক্ষার ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের প্রায় অর্ধেক কর্মীই বছরে ২৯ হাজার পাউন্ডের কম আয় করেন।
চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে যুক্তরাজ্যে বাইরের দেশ থেকে স্বামী বা স্ত্রী আনার ক্ষেত্রে বার্ষিক ন্যূনতম ২৯ হাজার পাউন্ড আয় থাকার শর্ত কার্যকর করবে হোম অফিস। বর্তমানে এ আয়সীমা ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ড রয়েছে। ২০২৫ সালে ব্রিটেনে স্পাউস আনতে হলে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড আয় করতে হবে।
যদিও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন পর্যবেক্ষণ সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে,৭০ শতাংশ ব্রিটিশ কর্মীই বছরে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড আয় করতে পারেন না।
মূলত নেট মাইগ্রেশন রেকর্ড সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ার পর কেয়ার ভিসাসহ অন্যান্য ওয়ার্ক পারমিট ও স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য সরকার নতুন করে শর্তারোপ করছে। স্পাউস ভিসার ক্ষেত্রেও তখন সরকার নতুন করে শর্তারোপ করেছিল। যদিও ব্রিটেনে অন্যান্য যত ভিসা ইস্যু হয় স্পাউস ভিসার হার তার মধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যে অভিবাসন কমানোর প্রক্রিয়ায় ভিসানীতিতে কড়াকড়ি আরোপের সমালোচনা করে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছিলেন, হাজার হাজার বিদেশি কর্মী ও তাদের পরিবারের ওপর এই বাড়তি শর্ত দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
লন্ডনের লেক্সপার্ট সলিসিটর্স এলএলপি’র ম্যানেজিং পার্টনার ব্যারিস্টার শুভাগত দে শুক্রবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ছাত্র ও কাজের ভিসার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালুর পর সেই ভিসার শর্তে ঘন ঘন পরিবর্তনে ভিসাধারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এমনটি না করে যেকোনও নতুন ভিসা চালুর আগে ভিসার শর্ত নিয়ে হোম অফিস যদি সার্বিক সম্ভাব্যতা গভীরভাবে যাচাই করত তাহলে প্রকৃত দক্ষ কর্মীরাই কেবল আসার সুযোগ পেত। একই সঙ্গে ভিসা নিয়ে আদম ব্যবসায়ীদের তৎপরতা অনেকাংশে বন্ধ হত।
ব্রিটেনের কাজের ভিসার ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন আসছে
কেয়ার ভিসায় ডিপেন্ডেন্ট আনতে না পারার নতুন শর্ত আগামী ১১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কেয়ার কোয়ালিটি কমিশনের নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন কেয়ার হোমগুলো বিদেশি কর্মী স্পন্সর করতে পারবে।
দক্ষ কর্মী ভিসার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বেতনসীমার বিষয়ে ১৪ মার্চ হোম অফিস ঘোষণা দেবে। এ ভিসায় বেতনসীমা ২৬ হাজার ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ অর্থাৎ প্রায় ৪৮ শতাংশ বর্ধিত হার ৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
৬ ফেব্রুয়ারি থেকে হেলথ সারচার্জ বৃদ্ধি কার্যকর হবে। ৬ এপ্রিল থেকে হোম অফিস স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়নের শর্ত প্রত্যাহার করবে।
এপ্রিলের শুরু থেকে শর্টেজ অকুপেশন লিস্টের নতুন অভিবাসী বেতন তালিকা কার্যকর হবে।