সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়া ও অতিরিক্ত দূষণের কারণে খুশকি হয়। এর ফলে চুল পড়া, রুক্ষতা ও মাথার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। শীতের সময় চুল ও মাথার ত্বক আর্দ্র রাখা খুবই জরুরি। অন্যথায় বাড়ে খুশকির প্রকোপ।
‘রেড বিউটি স্যালনের’ কর্ণধার ও রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, “শুষ্ক মাথার ত্বকের অধিকারীদের খুশকির প্রবণতা বেশি। আর খুশকির সমস্যার কারণেই চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে, যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত তারা ভালো মতো চুল পরিষ্কার করলে এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন।
তার মতে, মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে নিয়মিত শ্যাম্পু করলে ধীরে ধীরে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের কিছুটা বাড়তি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।
খুশকি দূর করার উপায়
নারিকেল তেল: চুলের যে কোনো সমস্যা দূর করতে নারিকেল তেল বেশ কাজে দেয়। রাসায়নিক উপাদান মুক্ত নারিকেল তেল খুশকির সমস্যা কমাতে ও মাথার ত্বকের সংক্রমণ রোধে কার্যকর।
তেল হালকা গরম করে ভালো মতো মাথার ত্বকে মালিশ করতে হবে। এতে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং চুলের কূপ উন্মুক্ত হবে।
তাই সপ্তাহে অন্তত দুবার চুলের গোড়ায় সামান্য উষ্ণ নারকেল তেল মালিশ করা উচিত। তেল মাথার ত্বকে প্রবেশ করবে ও চুলে পুষ্টি যোগাবে। তেল মালিশে অপুষ্ট চুল পুষ্টি পায় এবং পুষ্ট চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।
মাথার ত্বকে মালিশ করা খুশকি দূর করতেও সহায়তা করে। আর খুশকি কমলে চুল পড়া অনেকটাই কমবে।
এছাড়াও নারিকেল তেলের সঙ্গে দুই চা-চামচ লেবুর রস যোগ করে মাথার ত্বকে মালিশ করতে হবে। আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে দুবারের বেশি লেবু ব্যবহার করা উচিত নয়।
টক দই: খুশকির সমস্যায় বেশ কার্যকর। টক দই মাথার ত্বকে ভালোভাবে মেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ভালো মতো ধুয়ে ফেলতে হবে।
টক দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় ব্যবহার করে ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নেওয়ার পরামর্শ দেন, আফরোজা পারভীন।
এই প্যাক চুলের খুশকি দূর করার পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে। সপ্তাহে দুবার এই প্যাক ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
অন্যান্য উপাদান: খুশকি দূর করার আরেকটি কার্যকর উপায় হল নিয়মিত মাথার ত্বকে অ্যালো ভেরার জেল ব্যবহার। এতে খুশকির সমস্যা কমে ও মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
অ্যালো ভেরা আর মেথি একসাথে খুব ভালো কাজ করে।
সপ্তাহে একদিন অ্যালো ভেরা অথবা আমলকীর রস মাথার ত্বকে মালিশ করলে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি চুল ঘন ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয় বলে জানান, এই রূপবিশেষজ্ঞ।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, খুশকির সমস্যা সমাধানে নিম, মেথি, ভৃঙ্গরাজ, জবা ফুল, অ্যালোভেরা এবং আমলকী উপকারী।
নিমের ফাঙ্গাস ও ব্যাক্টেরিয়া-নাশক উপাদান মাথার ত্বকের সংক্রমণ কমায়। ফলে খুশকি দূর হয়। সপ্তাহে তিনদিন নিমের তেল মালিশ করা ভালো ফলাফল দেয়।
জবা ফুলের নির্যাসও খুশকি দূর ও চুল কালো করতে দারুণ কাজে আসে। নারিকেল তেলের সাথে নিমের তেল ও জবা ফুলের পাপড়ি গরম করে ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।