সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ। টিলাঘেরা ক্যাম্পাসটির রূপ-লাবণ্য মুগ্ধ করে সবাইকে। প্রকৃতি যেন উদার হয়ে রূপ-লাবণ্যে ভরিয়ে দিয়েছে তৎকালীন আসাম প্রদেশের একমাত্র এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। শতবর্ষী কলেজটিকে আরো নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলতে ক্রমাগত ব্যতিক্রমী সব উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বর্তমান এমসি প্রশাসন।
কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো কলেজটিকে নজরদারির আওতায় আনার কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বসানো হয়েছে প্রেরণা আর সচেতনতামুলক বিভিন্ন সাইনবোর্ড। এগিয়ে চলছে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের কাজও৷ এসবের মধ্যে সবচেয়ে আনন্দের খবর হলো শতবর্ষী কলেজটিতে এবার রোপন করা হয়েছে ফলদ, বনজ, ভেষজ ও ফুলের ৭০ হাজার গাছের চারা।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশাল এই প্রজেক্টটি বাস্তবায়ন করছে সিলেটের বন বিভাগ। সবুজ অরণ্যে মায়াময় এমসি কলেজের ইতিহাসে এর আগে এতো বড় পরিসরে বৃক্ষ রোপন হয়নি।
গাছের চারাগুলো রোপন করার আগে ক্যাম্পাসের আঙিনা আর টিলাগুলোতে থাকা ঝোপঝাড়গুলো পরিষ্কার করা হয়েছে।
‘দেশের বায়ু দেশের মাটি, গাছ লাগিয়ে করবো খাঁটি’ স্লোগানকে সামনে রেখে পরবর্তীতে নির্দিষ্ট দূরত্ব ও নিয়ম মেনে চারাগুলো রোপন করা হয়। উঁচু নিচু টিলায় সারি সারি গাছ ১৪৪ একরের ঐতিহ্যবাহী ক্যাম্পাসটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সিলেটের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বলেন, ১২৯ বছরের পুরনো এই বিদ্যাপীঠের অনেকগুলো টিলা আছে। যেগুলোতে প্রাকৃতিক ভাবে বিভিন্ন আগাছা গজে উঠেছে। এই টিলাগুলো পরিষ্কার করে গাছ লাগানোর বিষয়টা প্রথম থেকেই মাথায় ছিল। এজন্য সিলেট বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করি৷ কর্তৃপক্ষ আমাদের আবেদনটি আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেন।
এরপর কলেজ ছাত্রাবাসে প্রায় ৮০ হাজার বীজ বপন করে নার্সারি করা হয়। যেখান থেকে ৭০ হাজারের মতো চারা কলেজের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করা হয়। অধ্যক্ষ আরও বলেন, এর জন্য কলেজের টিলাগুলোকে আগে ভাল করে পরিষ্কার করা হয়। যাতে করে গাছগুলোর বেড়ে ওঠায় কোনো সমস্যা না হয়। তিনি বলেন, গাছগুলোর পরিচর্যা এবং দেখভালের জন্য সবসময়ই কিছু মানুষ দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ বলেন, গাছগুলো বেড়ে উঠলে সিলেটের এই ক্যাম্পাসটি দেখতে আরো বেশি চমৎকার লাগবে।