শারদীয় দুর্গাপূজার অন্যতম অঙ্গ হল কুমারী পূজা। নাবালিকা কন্যা শিশুকে দেবীরূপে পূজা করে নারীশক্তিকে সম্মান জানানো হয় এই কুমারী পূজার মাধ্যমে। সিলেটেও মহা অষ্টমীতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট নগরীর নয়াবাজার কুশিঘাট মণিপুরী পাড়া পূজামণ্ডপে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মীয় বিধি মোতাবেক এবার এই মণ্ডপে ৭ জন মেয়ে শিশু কুমারী পূজায় অংশগ্রহণ করে। একই সময় লালাদিঘির পাড় মণিপুরী পাড়া মণ্ডপে ৫ জন মেয়ে শিশু এই কুমারী পূজায় অংশগ্রহণ করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপূজা করলেও সব পূজামণ্ডপে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয় না। দেশের বিভিন্ন জেলায় রামকৃষ্ণ মিশনের আয়োজনে মহা অষ্টমীতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সেসব কুমারী পূজায় সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তবে সিলেটে রামকৃষ্ণ মিশনের আয়োজনে কুমারী পূজা না হলেও মণিপুরীদের মণ্ডপে কুমারী পূজা আয়োজন করা হয়।
সিলেট মহানগরীতে ১৫৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে মণিপুরী সম্প্রদায়ের ৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ৫টির মধ্যে নয়াবাজার কুশিঘাট মণিপুরী পাড়া ও লালাদিঘির পাড় মণিপুরী পাড়া মণ্ডপে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৪ থেকে ১০ বছরের এক বা একাধিক কন্যা শিশু এই কুমারী পূজায় অংশগ্রহণ করে। ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী এই পূজা করা হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মণিপুরী সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী কুমারী পূজা দেখতে ভিড় করেন এই দুটি মণ্ডপে। সবাই মণ্ডপে এসে আগে দেবী দুর্গার প্রতিমার সামনে ভক্তি করেন। বিধি অনুযায়ী কুমারী পূজা শেষে দর্শনার্থীরা ছোট্ট দুর্গারূপী কুমারীদের ভক্তি করে তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেন। পরে প্রসাদ গ্রহণ করে নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন।
কুশিঘাট মণিপুরী পাড়া মণ্ডপে কুমারী পূজা দেখে আসে সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ মণিপুরী পাড়া এলাকার কিশোরী সুপ্রভা সিনহা। সে গণমাধ্যমকে বলে, দুর্গাপূজায় কুমারী পূজা সবচেয়ে আকর্ষণীয়। আমি নিজেও ২০১৮ সালে কুমারী হয়েছিলাম। এবার আমার খালাতো বোন কুমারী হয়েছে। তাই আমি অনেক উচ্ছ্বাসিত।
নয়াবাজার কুশিঘাট মণিপুরী পাড়া মণ্ডপে দেবী দুর্গার কুমারী রূপে পূজা দেওয়া হয় মিথিলা দেবী মৃদুলা, নেহা শর্মা, পূজা দেবী, প্রত্যুষা সিনহা, মৌনতা, তাহেণবী তাথৈ, সায়ন্তি দাস সিনহাকে। লালাদিঘির পাড় মণিপুরী পাড়া মণ্ডপে দেবী দুর্গার কুমারী রূপে পূজা দেওয়া হয় শ্রেয়া সিনহা, শ্রেষ্ঠা সিনহা, প্রাপ্তি, দিপ্তামনি, অদৃকা শর্মা
নীলাকাশ সংঘ সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি মিন্টু সিংহ গণমাধ্যমকে বলেন, কুমারী পূজা স্বামী বিবেকানন্দ প্রচলন করেন। নারীকে দেবী জ্ঞানে সেবা করা, নারীদের শ্রদ্ধা করা, যাতে তাদের শ্রদ্ধার আসনে রাখা হয়, সেজন্য কুমারী নারীর পূজা করা হয়। এবার ১২তম বারের মত আমরা কুমারী পূজা করছি। সকাল থেকেই পূজার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে কুমারী পূজা দেখার জন্য আমাদের মণ্ডপে দর্শনার্থীরা এসেছেন।