এনামুল কবীর :: ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসাবে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে তিনি কাজ করেছেন নিজের মেধা ও যোগ্যতার সবটুকু দিয়ে। এরপর যুবলীগের রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন অনেক বছর।
বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ জৈন্তাপুর-কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট আসনে অ্যাডভোকেট এম শাহজাহান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন, এটা পুরানো খবর। সে লক্ষ্যে তিনি দীর্ঘদিন থেকে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকার জনগনের ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তার আশাবাদের কারণও ব্যাখ্যা করলেন চমৎকারভাবে। জানালেন, তিনি একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। তার পরিবারের অন্তত ৭/৮ জন সদস্য সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাছাড়া তার দাদা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবেও অতিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি নিজে ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগ হয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। জীবনে অনেক কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াতের সময় কারাবরণ-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকারের সময়েও নির্যাতন সইতে হয়েছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন রাজনীতিতে তরুণ নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এসব দিক বিবেচনা করলেও সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তিনি পেতেই পারেন।
কথায় কথায় জানালেন, বর্তমান সাংসদ প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ এই আসনে অনেকদিন থেকে নির্বাচন করছেন এবং জনগন বারবার তাকে সংসদে পাঠাচ্ছেন। এখন তার অনেক বয়স হয়েছে। সেই হিসাবে দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে তরুণ প্রজন্মের কারও উপর নির্ভর করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মন্ত্রী ইমরান আহমদ রাজনীতিতে অভিজ্ঞ একজন মানুষ। সংসদ সদস্য হিসাবেও অভিজ্ঞ। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধার ঘাটতি নেই। দল তাকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই আমি তার সাথে আছি, থাকবো। তবে যদি তার ব্যতিক্রম কিছু হয়, তাহলে অবশ্যই মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, নির্বাচন এলে মনোনয়ন একাধিক ব্যক্তি চাইতেই পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত দলীয় সভাপতিই আমাদের সবকিছু। তিনি যাকে মনোনয়ন দিবেন তার জন্য আমরা সর্বস্ব উজাড় করে কাজ করি। অতীতেও আমি মনোনয়ন চেয়েছি। পাইনি। তবু দলীয় প্রার্থীর জন্য কাজ করেছি একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসাবে। আগামীতেও তাই করবেন বলেও জানালেন।
এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, আমি দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়ীত্বে আছি। তাছাড়া সিলেট জজকোর্টের সহকারি পিপি হিসাবেও জনগনের সেবা করে যাচ্ছি। মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে কাজ করার মানসিকতা আমার নেই। দলের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করে কাজ করছি সেই ছাত্রজীবন থেকে। সেই ধারাবাহিকতা অবশ্য বজায় থাকবে।
এদিকে নিজে মনোনীত হলে দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মী তার জন্য কাজ করার পাশাপাশি জৈন্তাপুর গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাবাসী দলমত নির্বিশেষে তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলেও তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। বলেন, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় এই আসনের জনগনের কল্যাণে রাজপথে কাটিয়েছি। এখনো রাজপথেই আছি। তারা প্রায় সবাই আমাকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ইনশাল্লাহ, দল মনোনয়ন দিলে আমি তার প্রতিদান দলকে দিতে সক্ষম হবো।
তার নিজের নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোও তিনি চিহ্নিত করে রেখেছেন। নির্বাচিত হলে তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জৈন্তাপুর কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার পাথর খোয়ারিগুলো পরিবেশ দূষণ না করে কিভাবে খুলে দেয়া যায়, সবার মতামতের ভিত্তিতে সরকারের সাথে আলোসাপেক্ষে সেই উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবেন। এতে এই আসনের লাশ লাখ মানুষের বেকারত্ব দূর হবে এবং তাদের আর্থিক সমস্যা সমাধান হবে। দেশের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র বিছানাকান্দি রোডটিরও প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ এবং অন্যান্য রাস্তাঘাটগুলোও উন্নত করতে কাজ করবেন তিনি। এছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলোও সমাধানে অগ্রাধিকার দিবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভূমি ও ঘরহীন মানুষগুলোকে ঘর বা ভূমি দেয়ার লক্ষ্যেও তিনি কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন। তিনি কোম্পানীগঞ্জ-জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সর্বস্থরের জনসাধারণ ও সিলেটের গণমাধ্যম কর্মীদের দোয়া ও সার্বিক সহযোগীতা চেয়েছেন।