
খাদিমনগরের তিন ওয়ার্ডে পূণঃনির্বাচন দাবি

প্রতিদিন প্রতিবেদক
প্রকাশ ২০২৩-০৩-১৮ ১০:২৩:২৭

সিলেট সদর উপজেলার ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে পূণঃনির্বাচন দাবি করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি সদস্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। এ ব্যাপারে তারা সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। প্রশাসন দ্রুত পূণঃনির্বাচন ঘোষণা না করলে বিক্ষুব্ধরা সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত লড়াই করারও ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুরের দিকে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিক স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে গত বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি কয়েকজন সদস্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
অভিযোগকারীরা হলেন, সদস্য প্রার্থী সোহাগ, আব্দুল হামিদ, ইলিয়াছ আলী, মহিলা সদস্য প্রার্থী সমলা বেগম ও মিনারা বেগম। তারা স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদের অভিযোগ সিলেটের জেলা প্রশাসককে জানিয়ে পূণঃনির্বাচন দাবি করেছেন।
স্মারকলিপিতে তারা অন্তত ১০টি অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। এরমধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, ৭নং ওয়ার্ডের মহিলা কেন্দ্রে আসা ভোটারদের প্রিজাইডিং অফিসার নিজে বিজয়ী টিউবওয়েল প্রতিকে ভোট দিতে বলেছেন। প্রথম ইভিএম মেশিন বন্ধ রেখে ভোটারদের বিভ্রান্ত করা, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে কেন্দ্রে যাওয়ার পর ‘এখানে আপনার ভোট নয়’ বলে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া, বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভোটারদে ভোট দান প্রক্রিয়া শেষের আগেই ‘হয়ে গেছে’ বলে ফিরিয়ে দিয়ে নিজেরাই টিউবওয়েল প্রতিকে ভোট প্রদান, অন্তত তিন থেকে ৪টি বুথ থেকে অ্যাজেন্টদের বের করে দেয়া, মেশিনের সমস্যা বা কাজ করছেনা ইত্যাদি বলে কর্মকর্তারা মেশিনে হাত দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট নিশ্চিত করা, ফলাফল না জানিয়েই প্রিজাইডিং অফিসার অ্যাজেন্টদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়ার অপচেষ্টা এবং নির্বাচনের আগের রাতে টিউবওয়েল প্রতিকের প্রার্থীর বাড়িতে অবস্থান নেয়া ও খাওয়া দাওয়া করা ইত্যাদি।
এসব কারণে জনগনের প্রকৃত রায় ছিনতাই হয়েছে বা অধিকাংশই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
আর তাই তারা এই ফলাফল বাতিল করে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং ইভিএম মেশিন চালানোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বদল করে নতুনভাবে খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে ৯নং ওয়ার্ডেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন এই ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য পদপ্রার্থী সোহাগ ছত্রি, সাহিদুল ইসলাম সোহেল এবং বিলাস ব্যানার্জি।
৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য পদপ্রপার্থী মিনারা বেগম ও সমলা বেগমও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাদের ভোটারদের বিভ্রান্ত করে বিজয়ী বই মার্কায় কর্মকর্তারাই ভোট দিয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। সমলা এবং মিনারাও দাবি করেছেন, জনগনের রায়ের প্রকৃত প্রতিফলন নিশ্চিত করতে যেনো এই ওয়ার্ডগুলোতে পূণঃনির্বাচন দেয়া হয়।
শুধু প্রার্থী নয়, ভোটাররাও পূণঃনির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার। তাদের মতে, ৭নং ওয়ার্ডের ফরিংউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরের দিকে একজন পোলিং অ্যাজেন্ট সরাসরি চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতিকে ভোট দিতে ভোটারদের প্ররোচিত করেছেন। পরে প্রিসাইডিং অফিসার তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এ ব্যাপারে সংবাদপত্রে তাৎক্ষনিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি মহিলা ভোটারদের বুথগুলোতে তাদের বিভ্রান্ত করে অন্যান্য কর্মকর্তারা টিউবওয়েল প্রতিকে ভোট দিতে বাধ্য করেছেন।
সচেতন ভোটাররাও এ তিনটি ওয়ার্ডে পূণঃনির্বাচন চেয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোটের দিন খাদিমনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইকলাল আহমেদকে পরাজিত করা হয়েছে উল্লেখ করে পৃথক আরেকটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সাধারণ ভোটাররা। তারাও এ ইউনিয়নে পূণঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
সিলেট প্রতিদিন/ ইকে

বিজ্ঞাপন স্থান
পুরাতন সংবাদ খুঁজেন
বিজ্ঞাপন স্থান
ফেসবুক মন্তব্য