
সিলেটে চোরের মাল খাচ্ছে ডাকাত!

প্রতিদিন প্রতিবেদক
প্রকাশ ২০২৩-০৩-১৮ ০৯:৫০:১৪

প্রতিদিন প্রতিবেদক :: সিলেটে চোরের মাল খাচ্ছে ডাকাত। এ যেনো অনেকটা হরিলুটের মত ব্যাপার-স্যাপার। আর চোরের দলের অবস্থা হচ্ছে অনেকটা ‘না পারি সইতে, না পারি কইতে’র মতো। নিরবেই হজম করতে হচ্ছে মোটা অংকের গচ্ছা। এই চুরি আর ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সিলেটের একদল চোরাকারী থেকে শুরু করে বিজিবি পুলিশের অসাধু কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং তথাকথিত কিছু অসাধু রাজনৈতিক নেতাও। আর এতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সপ্তাহখানেক আগের ঘটনা। নগরীর আম্বরখানা এলাকায় পৌঁছে অবৈধভাবে নিয়ে আসা বিশ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চিনির একটা চালান। ভাগে ভাগে সিলেট পর্যন্ত এসেছিল এই চালান। ভারত থেকে সীমান্ত পার করার দায়িত্ব ছিল একদল চোরাকারবারীর। তারা তাদের কাজ শেষের পর বাংলাদেশ সীমান্তে চালানটি রিসিভ করে একদল অসাধু ব্যবসায়ী। তাদের সাথে ছিল রাজনৈতিক দলের কিছু অসাধু নেতাকর্মী। তারা প্রভাব খাটিয়ে চালানটি পৌঁছে দেয় আম্বরখানা পর্যন্ত।
এখানেই এসে ঘটে বিপত্তি। যাদের হাতে চালানটি পৌঁছার কথা, তাদের হাতে পৌঁছার আগেই অপর একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল পুরো চালানটি নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। এ ঘটনায় মাথায় হাত সংশ্লিষ্ট চোরাই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের। কিন্তু যেহেতু চালানটি অবৈধভাবে এসেছে সেহেতু তারা আইনের আশ্রয় নেয়ারও কোন উপায় বের করতে পারেনি। পুরো বিনিয়োগের পুরো টাকাটাই হারিয়ে তারা চরম হতাশাগ্রস্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তারা একাধিক রাজনৈতিক নেতার সহযোগীতায় চালানটি উদ্ধারের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেন নি। এ ঘটনার সপ্তাহ দু’য়েক আগে এরকম আরেকটি চালান মার খেয়েছে। প্রায়ই এমনটা ঘটছে বলেও সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিশাল চোরাচালান সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। এসব সিন্ডিকেটের সাথে পেশাদার চোরাকারবারীর সাথে সাথে জড়িত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারাও। এমনকি কিছুকিছু এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরও সংশ্লিষ্ট থাকার কথা শোনা যায়। বিজিবিসহ প্রশাসনেরও কিছু অসাধু কর্মকর্তা চোরাকারবারের সাথে জড়িত। রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তাদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে নিয়ে আসা গরু, চিনি, কাপড় বা অন্যান্য পণ্যের চালান নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে যায়। তবে পৌঁছার পরে বা কখনো কখনো তার আগে আরেকদল রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী সেগুলোর দখল নিয়ে নেয়।
সম্প্রতি পরপর এরকম কয়েকটি চালান বেহাত হওয়ার পর এখন অনেক চোরাকারবারী বিনিয়োগ হারিয়ে উন্মাদপ্রায়।
চুরির উপর এমন বাটপারির কারণে সরকারও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদের প্রতিরোধে দেশের ভেতরে এবং সীমান্তে প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে- এমন মতামত সিলেটের সচেতন মহলের।
সিলেট প্রতিদিন/ ইকে

বিজ্ঞাপন স্থান
পুরাতন সংবাদ খুঁজেন
বিজ্ঞাপন স্থান
ফেসবুক মন্তব্য