
প্রবাসীদের আবেগ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে সাংবাদিক জমির হোসেনের দুটো বই

কবির আল মাহমুদ, স্পেন :
প্রকাশ ২০২৩-০৩-০৫ ০৪:৫২:৪৪

কবির আল মাহমুদ: সম্প্রতি অমর একুশের বই মেলায় প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক ও গীতিকার জমির হোসেন এর দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘জীবনের যত গান’ প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে একুশের বই মেলায় লেখকের প্রথম গ্রন্থ ‘প্রবাসে মেঘ জোৎস্না’ নামক গ্রন্থটিও দেশে বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এবারের এই বইটি গীতিকাব্য দিয়ে সাজানো। দেশি ও বিদেশি পাঠকের জন্য ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় করা হয়েছে। পরে ইতালিয়ানসহ অন্যানো ভাষায় করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফেলে আসা জীবনের অতীত, বর্তমান অনেক স্মৃতি আনন্দ-বেদনা। এমন ভাবনা থেকেই বোধকরি লেখক জমির হোসেন তাঁর দীর্ঘ প্রবাস-যাপনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন জীবনের গান ও ‘প্রবাসের মেঘ-জ্যোৎস্না’ বই দুটো।
ইতালি তথা ইউরোপের সর্বত্র অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রচার বিমুখ ইউরোপ-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক জমির হোসেন। তিনি তাঁর দীর্ঘ প্রবাস জীবনের নানা অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা সোয়া কোটি বাংলাদেশি প্রবাসীর কথা পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।’
তাই দুটো বই সম্পর্কে দুটো কথা লিখতে বসলাম। ইতিপূর্বে আমি আগে কখনো সাহস করিনি। যেখানে একটি পৃষ্টা লিখতে শুরু হয় দম বন্ধ যাওয়ার উপক্রম: ‘গ্রন্থ সমালোচনা’ বলতে যা বোঝায়, তা কিন্তু নয়। আমি শুনেছি যারা বই নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা' করে থাকেন বা লিখেন তারা বই রচয়িতার চেয়ে বেশি পাণ্ডিত্য রাখেন। সাহিত্য সম্পর্কে আমার জ্ঞান অতি সীমিত। অতএব বই-পুস্তক নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করার সাহস কিংবা শক্তি কোনোটাই আমার নেই।
দীর্ঘকাল প্রবাসে থেকেও মাতৃভূমির সাথে লেখক জমির হোসেনের এক ধরণের নাড়ির টান রয়েই গেছে। তার লেখালেখির বিষয়সমূহও তার প্রমাণ করে। যুগান্তর ও জাগো নিউজের কল্যাণে লেখক জমির হোসেন ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় ইউরোপ পাড়ি দেয়ার পূর্ব ২০০৯ থেকেই। এবং ইউরোপ আসার পর থেকেই এখন পর্যন্ত একজন সৎ আদর্শ এবং বহির্বিশ্বে দেশের জন্য নিবেদিত একজন কর্মঠ রেমিটেন্স যোদ্ধা। সেই সাথে লেখালেখি করেন সমান তালে, আর এই একটি জাগায় তার পতি আমার তৈরী হয় হিংসা। অতিসম্প্রতি আমি শারীরিক ও মানষিক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। প্রায় ১০'থেকে ১৫দিন হবে। সব ধরণের পারিবারিক এবং সামাজিক কিছু থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। এটা পরে আমি আমার ফেইসবুক এ একটি স্ট্যাটাস ও দিয়েছে। এই সুদীর্ঘ সময়ে বইদুটো অনেকটা ঔষুধ এবং যথার্থ বন্ধুর কাজ করেছে।
লেখক এখানে তাঁর প্রবাস জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা সোয়া কোটি বাংলাদেশি প্রবাসীর কথা কিছুটা হলেও পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন’। লেখাগুলো সুখপাঠ্য, ভাষা প্রাঞ্জল এবং মার্জিত। লেখার যে বিষয়টা আমাকে অবাক করেছে তা হল, সামাজিক অসঙ্গতি, হানাহানি -মৃত্যু ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয়গুলোর আলোচনাকে তিনি দারুণ রস দিয়েছেন।
দ্বিতীয় বইটি সম্প্রতি অমর একুশে বই মেলায় প্রকাশিত গ্রন্থটির নাম ‘জীবনের যত গান’। এবারের এই বইটি গীতিকাব্য দিয়ে সাজানো নামটি শুনতে অনেকটা রোমান্টিক মনে হলেও প্রথম যে বইটি শুরু করেছিলাম, সেটার নাম যথার্থ এবং হৃদয় বিদারক। এটি কোনও গল্প বা উপন্যাস বা প্রবন্ধ সংকলন নয়। অনেকটা আত্মজীবনীর মত, আবার আত্মজীবনীও নয় ঠিক লেখক প্রবাসের সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধা, চাওয়া-পাওয়ার কথা ফুটে উঠেছে। দেশি ও বিদেশি পাঠকের জন্য ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় করা হয়েছে।
লেখকের ভাষায় সুন্দর পরিচ্ছন্ন সমাজ বিনির্মানে সাহিত্য চর্চার কোন বিকল্প নেই। আর বই পড়া তার-ই বড় একটি অংশ। পাশাপাশি একটি বই একজন মানুষকে পরিবর্তন করতে পারে খুব সহজে। অসৎ পথের উল্টো দিকে পথচলায়ও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, শত ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে এক একটি লেখার আবিস্কার।
আশা করি পাঠকদের ভাল লাগবে। এছাড়া এই বইয়ের একটি কবিতা ইতোমধ্যে গানের জন্য রেকর্ডিং সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তা অবমুক্ত করা হবে। রোমান্টিক ধাচের এ গানের সুর করেছেন তরুণ সুরকার মুরাদ নুর, সঙ্গীত আয়োজনে মুশফিক লিটু এবং গেয়েছেন শিল্পী রুনা বিক্রমপুরী।
২০২০ সালে লেখকের প্রথম অর্থবহ প্রকাশনা ‘প্রবাসে মেঘ জোৎস্না’ নামক ৯৬ পৃষ্টার প্রথম গ্রন্থটির ন্যায় এবারও লেখকের দ্বিতীয় চমৎকার গীতিকাব্য ‘জীবনের যত গান’ গ্রন্থটির শুভেচ্ছা মূল্য মাত্র ২০০ টাকা।
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ইউনুস নাজিম। পরিবার পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাস জীবনের সংকট, আশা-নিরাশা, ভ্রমণ, সাহিত্য-সংস্কৃতির সাবলীলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বই দুটোয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সমাজ জীবনের দুর্লভ সবকিছুর রয়েছে সরল বয়ান। যেকেউ পড়লেই পেয়ে যাবে তার বাস্তব প্রমাণ।
এই বই দুটোই প্রবাস জীবনের আবেগ-উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি ও প্রবাসীদের আরো বেশী জানতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
লেখক : কবির আল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক, ইউরোপ-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব।
সিলেট প্রতিদিন/ এমএনআই

বিজ্ঞাপন স্থান
পুরাতন সংবাদ খুঁজেন
বিজ্ঞাপন স্থান
ফেসবুক মন্তব্য