সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলের কিছুদিন যেতে না যেতেই দলের অন্তর্কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। গেল কাউন্সিলে সভাপতি পদপ্রার্থী আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও বর্তমান সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চেীধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী তাদের নিজেদের মধ্যে আলাদা আলাদা বলয় রয়েছে। আর এসব বলয়ের অন্তঃকোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। এরই ফলস্বরূপ সম্প্রতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলয়ের নেতা, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলালুজ্জামান হেলালকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একইদিন হেলালুজ্জামান হেলাল ছাড়াও শামীম বলয়ের সিনিয়র আরও তিন নেতাকে শোকজ করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।

জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে গোলাপগঞ্জে একই স্থানে পৃথক সমাবেশ করেন দুই বলয়ের নেতাকর্মীরা। প্রথম সভাটি করেন সাবেক জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সমর্থকরা এবং দ্বিতীয় সভাটি করেন সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির কাইয়ূম -এমরান বলয়ের নেতাকর্মীরা। এরই জের ধরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার শামীম বলয়ের নেতা গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলালুজ্জামান হেলালকে সাময়িক বহিষ্কার করে সিলেট জেলা বিএনপি।একইদিন শামীম বলয়ের সিনিয়র আরও তিন নেতাকে শোকজ করা হয়।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে সাময়িক বহিষ্কার ও শোকজ করা হয়। 

শোকজ হওয়া তিন নেতা হলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিন উদ্দিন আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল আহমেদ ও পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল আহমেদ চৌধুরী।

এদিকে সাময়িক বহিষ্কার ও শোকজের খবরে গত ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার গোলাপগঞ্জ পৌর শহরের চৌমুহনীতে এক প্রতিবাদ মিছিল ও পথসভা করেছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির শামীম বলয়ের নেতাকর্মীরা। এসময় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী নেতাকর্মীরা নানা কটাক্ষমূলক স্লোগান দেন বলে জানা গেছে।

তবে, গোলাপগঞ্জে বিএনপির আলাদা সমাবেশ ভুল বুঝাবুঝির কারণে হয়েছে বলে জানান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ। তিনি বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল সহকারে দলীয় নেতাকর্মীরা এসেছিলেন, অনেকেই মনে করেছেন প্রোগ্রাম শেষ হয়ে গেছে, তাই তারা নিজেরা সভা করেছেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা বিএনপির এই সভাপতি বলেন, স্থানীয় বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে, ব্যক্তি স্বার্থে কেউ কেউ বহিষ্কার ও শোকজের মুখে পড়তে পারেন, এটি সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। বহিষ্কার ও শোকজের বিষয়টি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনি:সহ সভাপতি হেলালুজ্জামান হেলালকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ৩জনকে শোকজ করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, এটি একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। সিলেট জেলা বিএনপিতে কোন কোন্দল নেই, দল ঐক্যবদ্ধ আছে বলেও জানান তিনি।