
সিলেটের বিদায়ী এসপির জন্য কাঁদছেন মুক্তিযোদ্ধারা

প্রতিদিন প্রতিবেদক
প্রকাশ ২০২২-০৮-১০ ১১:২৯:১৬

সিলেটের পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর শান্তি রক্ষায় অনেক ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন ফরিদ উদ্দিন পিপিএম (অ্যাডিশনাল ডিআইজি)। জটিল এবং ক্লুলেস অনেক মামলার যেমন সহজ সুরাহা হয়েছে তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপের ফলে, তেমনি নানা সংকটে মানবিক কাজের দ্বারাও তিনি দারুণভাবে প্রশংসিত সিলেট বিভাগজুড়ে। এক্ষেত্রেও প্রচুর উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সিলেটের বিদায়ী এ পুলিশ সুপার। তার মানবিক কার্যক্রমে অনেকে যেমন আনন্দে ভাসছেন, তেমনি আবেগাপ্লুত হয়ে কাঁদছেনও।
তেমনটাই দেখা গেলো বুধবার সিলেটে তাকে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ইউনিট।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে এসপি ফরিদের মানবিক কাজকর্মের স্মৃতিচারণ করেছেন প্রায় সব বক্তা। এসব স্মৃতিচারণে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর ভূঁইয়া গ্রেফতারের বিষয় থেকে শুরু করে করোনাকালে পুলিশের মানবিক দায়িত্ব পালন, ওসমানীনগরে প্রতিবন্ধী গৃহহীনকে ঘরে তুলে দেয়াসহ সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে নির্ভরতার প্রতিক হয়ে দাঁড়ানো, অন্ধ হাফেজকে নতুন ঘর তৈরি করে দেয়া- ইত্যাদির মাধ্যমে তিনি অনেক মানুষের চোখে আনন্দের অশ্রু বইয়ে দিয়েছেন।
তবে সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তিনি দারুন একটি কাজ করে বিভাগজুড়ে অনন্য এক নজির সৃষ্টি করেছেন। এক সময়ের অবহেলিত এসব যোদ্ধাদের সম্মাণ জানাতে জেলার প্রতিটি থানায় একেকটি চেয়ার সংরক্ষণ করে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নও করেছেন। এখন সিলেটের প্রতিটি থানায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ চেয়ার সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের কোন কাজে থানায় গেলে তারা সেই চেয়ারেই বসেন।
এতে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ব্যাপক সাঁড়া ফেলে দেন এসপি ফরিদ উদ্দিন। বিশেষ করে তার এমন সিদ্ধান্তে অনেক মুক্তিযোদ্ধার চোখে আনন্দ অশ্রæর বন্যা বয়ে গিয়েছিল।
সেই আনন্দ তাদের মধ্যে এখনো আছে। সেটা বুঝা গেলো জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে কয়েকজন বক্তা কেঁদে ফেলেছিলেন বলে জানিয়েছে অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র।
তাদের পরিস্কার বক্তব্য, আমাদের জন্য এমন ব্যবস্থা ফরিদ সাবের আগে আর কেউ করেন নি। তিনি আমাদের যে সম্মাণ দিয়েছেন, যেভাবে মূল্যায়ন করেছেন তাতে সিলেটের মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিতবোধ করছেন- কোন সন্দেহ নেই।
কানাইঘাটের একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অনুষ্ঠান শেষে জড়িয়ে ধরতে গেলে তার চোখও এসময় ছলছল করতে দেখেছেন উপস্থিতি অনেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সমবেত অতিথিবৃন্দ।
তাদের সবার শুভকামনা নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন এসপি ফরিদ। সবার প্রশংসা আর ভালোবাসা নিয়ে তিনি আরও বহুদুর এগিয়ে যাবেন- এমন প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, শিল্পী আংশুমান দত্ত অঞ্জন, গোয়াইনঘাট শাখার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হক, কানাইঘাট শাখার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজমুল হক, সদরের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রইছ আলী, সিলেট মহানগর শাখার ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সিলেট জেলা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্রাম আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়, ৭১ এর ঘাতক দালার নির্মুল কমিটি সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সবুজ, সন্তান কমান্ডের আহবায়ক মনোজ কপালী মিন্টু, যুগ্ম আহবায়ক জাকারিয়া চৌধুরী জাকি, সদস্য সচিব এম এইচ পাভেজ বিশ্বাস, সদস্য ডিপজল পাত্র প্রমুখ।
সিলেট প্রতিদিন/ ইকে

বিজ্ঞাপন স্থান
পুরাতন সংবাদ খুঁজেন
বিজ্ঞাপন স্থান
ফেসবুক মন্তব্য