
সিলেটে তুচ্ছ ঘটনায় ‘ফাইভ মার্ডার’

প্রতিদিন প্রতিবেদক
প্রকাশ ২০২২-০৪-১০ ০২:৩০:২৪

সিলেটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত বাড়ছে অপরাধ। পূর্বশত্রুতার জের, ব্যাবসায়িক ও ব্যক্তিস্বার্থের দ্বন্দ্ব, জুনিয়র-সিনিয়র নিয়ে কথা-কাটাকাটি, এমনকি ঝগড়া-বিবাদ থামাতে গিয়েও একের পর এক ঘটছে হত্যাকাণ্ড। আহত হচ্ছে অনেকে।
সিলেটে গত ৪ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত খুন হয়েছেন ৪জন। তারমধ্যে ২জন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নিহত হয়েছেন। আরও দুজন কথাকাটা কাটির জের ধরে এবং একজন দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ জুনিয়র-সিনিয়র নিয়ে কথাকাটির জের ধরে শনিবার (৯এপ্রিল) রাতে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে এক যুবক। নিহত যুবকের নাম নাজিম আহমদ(২০)। পেশায় সে হোটেল শ্রমিক।সে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার নুর মিয়ার পুত্র ও সিলেট নগরীর দরগা মহল্লা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।তবে তাৎক্ষনিক তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এর আগে একইদিন ভোর ছয়টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানাধীন সাহেবের বাজারে জমিসংক্রান্ত সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ডা.মো. নিজাম উদ্দিন নামে এক পল্লী চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। তিনি বাজারতল গ্রামের মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল কাটাকাটি জের ধরে রুবেল আহমদ (২৮) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা যায়,শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল কাটাকাটি হয়। পরে এলাকার লোকজন বিষয়টি সমাধান করে দেন। আসরের নামাজের সময় জামাল আহমদের ছেলে ও ভাতিজাদের সঙ্গে সদর ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদের ভাই সরফ উদ্দিন নবাবের ছেলে ও ভাতিজাদের ঝগড়া হয়। ঘটনার সময় রুবেল আহমদ কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে আটকে রেখে মারধর শুরু করেন ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে রুবেল গুরুতর আহত হন। রুবেলকে বাঁচাতে গিয়ে তার ভাই সুমন আহমদও আহত হন। পরে স্থানীয়রা রুবেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৪এপ্রিল (সোমবার) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বাসিন্দা ফার্নিচার ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান সুমন (২৮) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় এক গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার ভোর ৫টার দিকে নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আতিকুর রহমান সুমন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকার আলেপুর গ্রামের মৃত আবু মিয়ার ছেলে।
সুমন হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সুমনের সহযোগি সোহেল মিয়াসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক সোহেল কমলগঞ্জ পৌর এলাকার আলেপুর গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে।
এর আগে গত রোববার(৩ এপ্রিল) সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুর বাজারে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের প্রায় ১০ ঘন্টাব্যাপী ম্যারাথন সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সোমবার(৪এপ্রিল) একজন নিহত হয়েছেন। তার নাম হাফেজ সালেহ আহমদ। নিহত সালেহ আহমদ স্থানীয় হেমু গ্রামের বাসিন্দা ও সিলেট নগরের মেজরটিলা তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসায় শিক্ষক। তিনি সংঘর্ষ থামাতে মধ্যস্তাকারীর ভূমিকায় ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের ৩ দিন পর বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল)নিহতের ভাই নুর উদ্দিন বাদি হয়ে জৈন্তাপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২-১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।এজাহারনামীয় আসামিদের সবাই হেমু হাউদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রফিক আহমদও ওই গ্রামের মৃত আহমদ আলীর ছেলে।
সিলেট প্রতিদিন/ এমএ

বিজ্ঞাপন স্থান
পুরাতন সংবাদ খুঁজেন
বিজ্ঞাপন স্থান
ফেসবুক মন্তব্য