২৩৯ জন আরোহীসহ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এর নিখোঁজ হওয়া বিশ্বের বিমান চলাচলের সবচেয়ে বড় অমীমাংসিত রহস্যগুলোর একটি। বছরের পর বছর ধরে বিস্তর তল্লাশি ও গবেষণা চালিয়েও বিমানটির পরিণতি বা ধ্বংসাবশেষের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এত দিনে হয়তো এই রহস্যের নিকষ অন্ধকারে একটি আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে।
২০১৪ সালের মার্চ মাসে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে বিমানটি রাডার থেকে উধাও হয়ে যায়। দূর-দূরান্তে সাগরে এর কিছু ভাঙা টুকরা পাওয়া ছাড়া আর কিছু মেলেনি।
রিচার্ড গডফ্রে নামের এক ব্রিটিশ বিমান প্রকৌশলী টানা বছরেরও বেশি সময় ধরে এ নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি মনে করছেন, ফ্লাইট ৩৭০ বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানটি অবশেষে ধরতে পেরেছেন তিনি। গডফ্রের হিসাব মতে, বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে দুই হাজার কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে।
রিচার্ড গডফ্রে বিবিসিকে বলেন, তিনি আশা করছেন, পরিণতি ও অবস্থান জানার মাধ্যমে আরোহীদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় জানা যাবে।
প্রকৌশলী গডফ্রে এরই মধ্যে বিভিন্ন গবেষণা ও অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে নিজের তথ্য বিশ্লেষণ করে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিমানটির সম্ভাব্য নতুন অবস্থান চিহ্নিত করেছেন।
গডফ্রে বলেছেন, আগে কেউই ইমারস্যাট স্যাটেলাইট ডাটা, বোয়িং বিমানের পারফরম্যান্স ডাটা, সাগরে ধ্বংসাবশেষ ভাসার গতিপ্রকৃতি ডাটা ও ডাব্লিউএসপিআর নেট ডাটা একত্র করে মিলিয়ে দেখার কথা ভাবেননি। তিনি সেটা করেছেন। গডফ্রের অনুসন্ধান দলের নির্ধারিত বিন্দুটি ভারত মহাসাগরের মোটামুটি ৩৩ ডিগ্রি দক্ষিণ এবং ৯৫ ডিগ্রি পূর্বে।
কোটি কোটি ডলার খরচ করে নিখোঁজ বিমানটির জন্য ভারত মহাসাগরে দুটি ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েও কাজ হয়নি।
ধ্বংসাবশেষটি সাগরতলের কোনো পাহাড়চূড়া বা গিরিখাদে লুকিয়ে থাকতে পারে। তিন-চারবার চক্কর দিলে হয়তো কিছু চোখে পড়বে। চার হাজার মিটার পর্যন্ত গভীরে তলিয়ে থাকতে পারে এটি—বলেন গডফ্রে।
২০০৯ সালে রিচার্ড গডফ্রের এয়ার ফ্রান্সের একটি ফ্লাইটে রিও ডি জেনিরো থেকে প্যারিস যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজে আটকে যাওয়ায় তিনি প্যারিসে যেতে পারেননি। ওই ফ্লাইটটি কখনোই তার গন্তব্যে পৌঁছয়নি। সূত্র : বিবিসি।