শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

সরকারি নিবন্ধন নম্বর : ৯৩

Sylhet Protidin 24
Post Top Bottom Google Ad Code

টিভিতে কী দেখবো?

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রকাশ ২০২১-১০-০৮ ১০:২৫:৫৬

IT Factory Ad

নাজনীন মুন্নী :: বিষয়টি আমি খেয়াল করছিলাম অনেক দিন আগেই। যেহেতু সাংবাদিকতা করি তাই কোনও বিষয়ে চট করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন। তাই দিনের পর দিন আমি এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। ফলাফল আমাকে ভীষণ রকম মন খারাপ করিয়েছে, সাথে আতঙ্কিত করেছে।

বলছি  আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর কনটেন্টের কথা।  কী দেখায়  আমাদের চ্যানেলগুলো? জনগণ কি আসলেই সেসব দেখতে চায়?

প্রশ্নটা তৈরি হয়েছিল একেবারেই ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। আমি দেখছিলাম একই জিনিস আমি করে যাচ্ছি বছরের পর বছর। চোখ যখন নিজের ওপর থেকে পুরো মিডিয়ার ওপর দিয়েছি তখন দেখেছি ঘটনা একই।

একই অনুষ্ঠান, একই ধরনের নিউজ বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। প্রশ্ন তখনই ছিল সংবাদকর্মী হিসেবে যা আমাকে আকর্ষণ করছে  না, তা কী করে জনগণকে করবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি আমি  অনেকখানিই।

বাংলাদেশে ফেসবুক সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এই দেশে  প্রায় ৫ কোটি মানুষ বুঁদ  হয়ে থাকে ফেসবুকের পাতায়। মুখ ফিরিয়ে নেওয়া দর্শক ধরে রাখতে টিভি চ্যানেলগুলো আশ্রয় নিলো ফেসবুকে।  নিজের প্রচার  বা  বিস্তারের জন্য সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেল ফেসবুকে তাদের নিজেদের জমি তৈরি করে ফেললো। যাকে বলে ‘ফেসবুক পেজ’।

সেখানে নিজের রাজত্বে জনগণও কম নয়।  একেক চ্যানেলের ফলোয়ার ৭০ থেকে ৮০ লাখ মানুষ। একটা ছোটখাটো দেশের সমান।  খুবই সুখবর  আপাতদৃষ্টিতে।  কিন্তু এই সব জনগণ ফেসবুকে বসে কি চ্যানেলের প্রচার করা অনুষ্ঠান দেখে? উত্তর হলো, খুবই কম।

এই যে দেখে কী দেখে না সেই হিসাব করতে জটিল টিআরপি  লাগে না।  ফেসবুক  ভিউ তাৎক্ষণিক বলে দিচ্ছে  কী দেখছে মানুষ। ফেসবুকজুড়ে নানা প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তিগত ব্যবসার হাট। একজন শাড়ি বিক্রেতার লাইভে যেখানে একসাথে ৬ বা ৭ হাজার মানুষ চোখ রাখছে সেখানে টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়া কোনও শো যখন ফেসবুকে স্ট্রিমিং করা হয় সেখানে দর্শক ৩শ’ও থাকে না।

এটা তো ফেসবুকের  হিসাব, বাস্তবেও কি মানুষ টিভিতে আমাদের চ্যানেল দেখে? এই প্রশ্ন  আমি নিজে অনেককে করেছি, অনেকে যেচেই বলেছেন– দেখতে ইচ্ছে করে এমন কী দেখান  টিভিতে? আমারও একই প্রশ্ন– কী দেখাই আমরা, যা দেখার মতো? যদি জানতে চাই  চট করে,  বলুন তো এই দেশের জনপ্রিয় একটা শো বা অনুষ্ঠানের নাম।  আমি নিশ্চিত বেশিরভাগ মানুষই পারবেন না। আমরা যারা কাজ করি গণমাধ্যমে, তারাও পারবো না।

এই দেশের অধিকাংশ চ্যানেলে বাধ্যতামূলক টকশো আর নিউজ।  প্রতিঘণ্টার নিউজে এমন নতুনত্ব বা বৈচিত্র্য থাকে না যা  সারা দিন-রাত মানুষকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। যেকোনও এক চ্যানেলের খবর  দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন কী ঘটছে দেশ-বিদেশে।

একজন আরেকজনকে অনুকরণ করাই আমাদের প্রধানতম কাজ।  কয়েকটি নিউজ চ্যানেল আছে  যেখানে প্রায় সব একই। হঠাৎ যদি লোগো মুছে দেন  আমি নিশ্চিত অনেকেই বুঝতে পারবেন না কোনটা কোন চ্যানেল।

এই দুর্দশা তো একদিনে হয়নি। হয়েছে বছরের পর বছর।  একুশে টিভি এই দেশে এক দারুণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল।  ঘটনা ২১ বছর আগের।  সেই সময় একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ যাদের  তৈরি করেছিলেন তারাই এ দেশের ৩২ টি চ্যানেলের সাথে নানাভাবে কাজ করছেন।  ২১ বছর আগের  সময় আর এখনকার চাহিদা  কি এক? ২১ বছর আগে মানুষ যা দেখে বাহবা দিয়েছে বা মুগ্ধ হয়েছে  এই সময়ে তা-ই দেখতে চাইবে- এই ধারণা কীভাবে আমরা ধরে  রাখলাম?

চ্যানেল মানেই এক বা একাধিক  টকশো,  সেখানে  যারা গেস্ট থাকেন  তারাও সবাই সব চ্যানেলে কথা বলেন। একই কথা ঘুরে ফিরে সব জায়গায়।  টকশোর বাইরে কোনও অনুষ্ঠান কি চ্যানেলগুলোতে  খুঁজে পায় না। বিনোদন  কোথায় পাবে মানুষ?  ‘ইত্যাদি’র মতো  ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান বা ‘সংশপ্তক’ বা ‘কোথাও কেউ নেই’- এর মতো নাটক কি এই দেশে কেউ বানায় এখন?

নিজেদের যদি স্বকীয়তা না থাকে  তাহলে অন্তত ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ বা ‘সা রে গা মা পা’ বা ‘আমেরিকান আইডল’ কেন  আমরা অন্তত বানানোর চেষ্টা করি না বা অন্তত একটা রান্নার প্রতিযোগিতা?

আসলে আমরা কি চেষ্টা করি কোনও? এই দেশে মেধাবী মানুষের অভাব নেই। তাদের  কাছ থেকে আদায় করার কষ্টটাই আমরা হয়তো কেউ নেই না। কারণ, আমাদের কাছে ৩ জনকে এনে কথা শোনা সবচেয়ে সহজ। ‘দামে কম, মানে ভালো’ টাইপ।

দিন বদলায়, সাথে মানুষের রুচি, সাথে কারা  টিভি দেখে সেই গোষ্ঠীও।  আমরা যারা চ্যানেলগুলো নিয়ন্ত্রণ করি তারা কি জানি যে ২০ বছরের একজন তরুণ কী দেখতে চায়, তার মনোজগৎ কী? আমরা কি  জানতে চাই আমার বাসার মা থেকে শুরু করে কাজের সহকারী মানুষটি  একযোগে কোন লোভে ভারতীয় চ্যানেলে আটকে থাকে? আমরা কি জানতে চাই এ দেশের  প্রায় ৪ কোটি শিশু আছে; তারা কী দেখতে চায়? আমরা কি কিছু জানতে চাই?

প্রায়ই মনে হয় আমরা চাই না। অল্প টাকায় কয়েকজন কর্মী দিয়ে আমরা কেবল অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাই, যাতে নিজেদের  নানা প্রয়োজনে এই চ্যানেলগুলো ব্যবহার করতে পারি এই কারণে। পুরো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে আমরা কি একবার জনগণের দিকে তাকাবো নাকি ঘরের টিভিকে কেবল ‘বাক্স’ হিসেবে দেয়ালে ঝুলাবো সেই সিদ্ধান্ত এখন কেবলই আমাদের। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত।

লেখক: সাংবাদিক

সিলেট প্রতিদিন/ ইকে

Local Ad Space
Post Top Bottom Google Ad Code

বিজ্ঞাপন স্থান


পুরাতন সংবাদ খুঁজেন

ফেসবুক পেইজ

হবিগঞ্জের ৪ আসনে ৪০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল


সৌম্যের ফেরা আর মাহমুদউল্লাহর না থাকার...


প্রধানমন্ত্রীর আসনে ৮ প্রার্থী


মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ড. জয়া সেনগুপ্তা


তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১২ প্রার্থীকে...


সিলেট-৫ আসনে ৮জনের মনোনয়নপত্র দাখিল


পদত্যাগ করলেন সালাউদ্দিন


সিলেট-২ আসন মনোনয়ন দিলেন ফল ব্যবসায়ীসহ ১৪...


সুনামগঞ্জ-৫ আসনে লড়তে চান ১১ জন


কুলাউড়ায় কাঁদলেন এবং কাঁদালেন এমএম শাহীন


মৌলভীবাজারে মনোনয়ন জমা দিলেন ৩২ জন


সিলেটে কেমুসাস বইমেলার উদ্বোধন শুক্রবার


সিলেট-৩ আসনে শেখ জাহেদুর রহমান মাসুমের...


সিলেটের ৬ আসনে ৪৮টি মনোনয়নপত্র জমা


দক্ষিণ সুরমায় মহান বিজয় দিবসের প্রস্তুতি সভা


সপ্তম বারের মতো এমপি হতে মনোয়নপত্র জমা দিলেন...


মনোনয়ন দাখিল করলেন মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান


মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক...


লাখাইয়ে আ.লীগসহ দু’দলের মনোনয়ন পত্র দাখিল


সুনামগঞ্জ-১ আসনে বিকল্পধারা প্রার্থীর...


সিলেট-৩ আসনে আ.লীগের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি...


সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের দুই নেতা আটক


সিলেট-৬ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন শমশের মবিন...


আবারো অবরোধ ডাকল বিএনপি


সুনামগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আ:লীগের...


সিলেট-৪ মনোনয়নপত্র জমা দিলেন প্রবাসীকল্যাণ...


নবীগঞ্জে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা...


সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন হুছামুদ্দীন...


সিলেট-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শফিক চৌধুরীর...


শান্তিগঞ্জে বিজয় দিবস উদযাপনে উপজেলা...


৭ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি বাড়ল গাজায়


মানবতাবিরোধী অপরাধে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড


মুমিনুলের দুই উইকেটে অবশেষে অলআউট...


মাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না রুয়েলের


দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন নওয়াজ শরীফ


বিজ্ঞাপন স্থান